ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বিপিসি ও পেট্রোবাংলার রাজস্ব বকেয়া ২২,৮২৪ কোটি টাকা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৭, ২৬ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিপিসি ও পেট্রোবাংলার রাজস্ব বকেয়া ২২,৮২৪ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের দুই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও পেট্রোবাংলার কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ‌্যাট বাবদ মোট বকেয়া রাজস্বের পরিমাণ ২২ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা।

এ কারণে সদ‌্য বিদায়ী ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের মূল লক্ষ‌্যমাত্রা ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা অর্জনে বেশ শঙ্কায় ছিল প্রতিষ্ঠানটি। যদিও অর্থবছরের শেষের দিকে লক্ষ‌্যমাত্রা কমিয়ে ১ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়।

এনবিআরের জ্যেষ্ঠ তথ‌্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন রাইজিংবিডিকে এসব তথ‌্য জানিয়েছেন।

এনবিআর এ বিষয়ে জানায়, এনবিআর সরকার নির্ধারিত মূল লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান বিপিসি ও পেট্রোবাংলা বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পরিশোধ করছে না। এর ফলে তাদের কাছে বকেয়া দীর্ঘ দিন ধরে পুঞ্জিভূত হচ্ছে।

ব‌্যাখ‌্যায় বলা হয়, পেট্রোবাংলা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এনবিআরকে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা পরিশোধ করলে বর্তমান অর্থবছরে মোট রাজস্ব পরিমাণ হতো ১ কোটি ৯০ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। অন‌্যদিকে মোট বকেয়া ২২ হাজার ৮২৪  কোটি টাকা পরিশোধ করা হলে রাজস্বের পরিমাণ ২ লাখ ৭ হাজার ৮২৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যা ওই অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৬৭৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বেশি হতো।

এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে রাজস্ব আহরণে ব্যাঘাত ঘটায় রাজস্বে লক্ষ্যমাত্রা প্রত্যাশিত পর্যায়ে পৌঁছানো যায়নি বলে এনবিআর থেকে জানানো হয়।

ব‌্যাখ‌্যায় আটটি কারণ উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। কারণগুলো হলো-

এ বছর ভ্যাট আইন-২০১২ বাস্তবায়নকে সামনে রেখে করদাতা ও ব্যবসায়ীগণকে সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভ্যাটের চলতি হিসাবের টাকার জের ‘শূন্য’করে আনা হয়। ফলে মাসের শেষ ৬/৭ দিন সাধারণভাবে যে হারে পণ্য খালাস ও রাজস্ব জমা হয় সেভাবে হয়নি।

ভ্যাটের মূল রাজস্ব আসে সিগারেট খাত ও মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে। জুন মাসে অপ্রত্যাশিতভাবে এ খাতে রাজস্ব আহরণ হ্রাস পায়।

জুন মাসের শেষ সপ্তাহে রমজান ও ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে আমদানি পর্যায়ে পণ্য খালাস হ্রাস পেয়েছে এবং রাজস্ব আহরণ হ্রাস পেয়েছে। একইভাবে লম্বা ছুটির নেতিবাচক প্রভাব স্থানীয় ভ্যাট ও আয়কর আহরণের ক্ষেত্রেও পড়েছে।

রাজস্ব আহরণের অন্যতম খাত হলো ‘উৎসে কর ও আয়কর’। অর্থবছরের শেষ সময়ে ঈদের দীর্ঘ ছুটির কারণে সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কাজকর্ম কমে যায় এবং রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে।

ব‌্যাংকি খাতে ১৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির জন্যে আয়কর খাতে রাজস্ব আহরণ হ্রাস পেয়েছে।

নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নকে সামনে রেখে ভ্যাট ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মঘণ্টার একটা বড় অংশ এ আইন নিয়ে কাউন্সেলিং ও সভা সেমিনারে ব্যয় হয়েছে। ফলে অন্যান্য অর্থবছরের মতো কর্মকর্তাগণ রাজস্ব আহরণে স্বাভাবিক মনোযোগ দিতে পারেননি।

আমদানি পর্যায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রকল্পসমূহকে আমদানি শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেয়। এর মধ্যে জ্বালানি খাতকে উৎসাহিত করার জন্যে প্রদত্ত অব্যাহতি উল্লেখযোগ্য।

এ ছাড়া মাসের শেষ সপ্তাহে অনেকে বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঈদের ছুটি ও ব্যাংক বন্ধের কারণে সে বকেয়া অর্থও পাওয়া যায়নি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুলাই ২০১৭/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়