ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাঁচ শিল্প প্রতিষ্ঠান ফেরত চায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০২, ২৮ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাঁচ শিল্প প্রতিষ্ঠান ফেরত চায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়

কেএমএ হাসনাত : রাষ্ট্রায়ত্ব পাঁচ শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ না করে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সরকারের ব্যয় কমিয়ে নব্বই দশকের গোড়ার দিকে রাষ্ট্রায়ত্ব লোকসানি বা বন্ধ শিল্প, কল-কারখানাগুলো বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার। এরপর যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে তারা এ নীতি অনুসরন করেছে।

এদিকে এই পাঁচটি শিল্প প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি পাওয়া গেছে বলে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়গুলোর অসহযোগিতার কারণে সরকারের এ নীতি আশানুরূপ সাড়া পায়নি। তবে বর্তমান সরকার বেসরকারিকরণ নীতির কঠোর অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসেছে। যে কারণে বেসরকারিকরণের উদ্দেশ্যে গঠিত বেসরকারিকরণ কমিশন বিলুপ্ত করে এবং ‘বিনিয়োগ বোর্ড’-এর সঙ্গে একীভূত করে গঠন করা হয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

সূত্র জানায়, বেসরকারিকরণের জন্য এর আগে গঠিত কমিশনে ন্যস্ত পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ব লোকসানি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আবার নিজের অধীনে নিতে চায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ফেরত চাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন রাজশাহী রেশম কারখানা ও ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন সিলেট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও চট্টগ্রামের ভালিকা উলেন মিলস লিমিটেড।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘ সময় ন্যস্ত থাকায় কারখানাগুলোর অত্যাবশ্যকীয় জনবল ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাকে বহন করতে হচ্ছে। ফলে বছরে বিটিএমসিকে প্রায় ৯৩ লাখ টাকা এবং রেশম বোর্ডকে ৩২ লাখ টাকার বেশি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি কারখানা বন্ধ থাকায় যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে পড়ছে এবং উৎপাদন না থাকায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। শ্রমিকরাও বেকার থাকছে, তাদের উৎপাদশীলতাও হ্রাস পাচ্ছে। তাই কারখানাগুলো চালু করা প্রয়োজন।

মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ইতোপূর্বে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চতুর্থ (২৩ জুলাই ২০১৪) বৈঠকে ‘ভবিষ্যতে কোন কারখানা বিক্রয় বা হস্তান্তরের বিষয়ে বেসরকারিকরণ কমিশনকে দায়িত্ব না দিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং সংসদীয় কমিটির এই সিদ্ধান্ত বেসরকারিকরণ কমিশনকে জানিয়ে দিতে হবে’ মর্মে সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। একই কমিটির পরবর্তী অর্থাৎ পঞ্চম (২১ আগস্ট ২০১৪) বৈঠকে ‘বেসরকারি কমিশনে ইতোপূর্বে ন্যস্ত মিল-কারখানা এবং বস্ত্র ও পাট খাতের সমুদয় সম্পত্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফিরিয়ে আনার জন্য আশু পদক্ষেপ নিতে হবে’ মর্মে সুপারিশ গ্রহণ করা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ তদানীন্তন বেসরকারিকরণ কমিশনকে জানানো হলে ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর এক পত্রে কমিশন জানায়, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া উল্লেখিত পাঁচটি কারখানা ফেরত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিসহ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য বৈঠকে তোলা হচ্ছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ নভেম্বর ২০১৭/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়