'ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর কল্পনা নয়'

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর কল্পনা নয়। আমরা অনেক এগিয়েছি। নতুন প্রজন্মকে শুধু বলতে চাই তোমাদের অনেক কিছু করার আছে। দেশ তৈরি হয়েছে, এখন তোমাদের কাজে মনোযোগী হতে হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিনদিনব্যাপী 'টেকশহর ডটকম ল্যাপটপ ফেয়ার ২০১৭' আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও সকাল ১০টা থেকেই মেলা ক্রেতা-দর্শণার্থীর জন্য উম্মুক্ত করা হয়।

ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘টেকনোলজি এগিয়েছে, আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে নেই। আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারি আবার কম্পিউটার, ল্যাপটপও ব্যবহার করতে পারি। বাঙালিরা সব কিছুই পারে। যেভাবে দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি। তাই তোমরা তোমাদের শক্তি কাজে লাগাও। প্রজন্মের কাছে বলতে চাই শোককে শক্তিতে পরিণত করে তোমরা কাজের বাস্তবায়ন করো।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের জ্যেষ্ঠ্য পুত্র সাংবাদিক-নির্মাতা বিপুল রায়হান বলেন, ‘আমরা লাল সবুজ পতাকা পেয়েছি, সুন্দর একটি দেশ পেয়েছি, এখন প্রয়োজন দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাই সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশ যত বেশি হবে আমরা এগিয়ে যাবো তত। তবে একটি কথা, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত করতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কারণ, তালিকা করে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।’

বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘দেশে অসাধারণ দুটি কাজ হয়েছে। সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার নিয়ে। হার্ডওয়্যার উৎপাদনে ঊর্বরভূমিতে পরিণত হয়েছে আমাদের দেশ। কিন্তু ব্যাপারটি এত সহজ ছিল না। প্রযুক্তিতে এখন অনেক এগিয়েছি আমরা। বাংলাদেশের দিকে সবাই বিস্ময়ের চোখে তাকায়। কারণ, আমরা যখন আমাদের দেশকে  ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি তখনও অনেকের তুলনায় পিছিয়ে ছিলাম।’

সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এটা অর্জন উল্লেখ করে এই প্রযুক্তিবিদ বলেন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে প্রযুক্তি খাতে যে অগ্রগতি হয়েছে তার সিংহভাগ হয়েছে বিগত সাত বছরে।’

বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, ‘আমরা যখন উইকিপিডিয়াতে কাজ শুরু করি তখন ১ হাজার জন শহীদের নাম ছিল। এখন এর সংখ্যা আরো বেড়েছে। আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। যেটা গুগল সার্চ করলেই বোঝা যায় কতটুকু এগিয়েছি। ২০০৯ সালে যখন ঘোষণা হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ, তখন থেকে অনেক কাজ করতে হয়েছে; এখনও চলছে। তবে আশার কথা আমরা অনেক এগিয়েছি এবং আরো এগিয়ে যাবো।

বিআইসিসির মিডিয়া বাজারে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এক্সপো মেকারের কৌশলগতপরিকল্পনাকারী মুহম্মদ খান, এইচপির বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার সালাউদ্দিন মো. আদিল, ডেল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিকুর রহমান।

প্রসঙ্গত, এক্সপো মেকারের আয়োজনে এটি দেশের ১৯তম ল্যাপটপ প্রদর্শনী। এবারের আয়োজনে একটি মেগা-প্যাভিলিয়ন, পাঁচটি স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, ১৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ২৭ স্টলে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। মেলায় বিভিন্ন পণ্যে রয়েছে ছাড় ও নানা ধরনের অফার।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কিংবা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে। প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে প্রবেশের এই সুযোগ পাবে। মেলায় টিকিটের অর্থ দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন সাংবাদিকের চিকিৎসায় সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৭/নাসির/শাহনেওয়াজ