ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রিজার্ভ চুরি নিয়ে নিউ ইয়র্কে মামলা হচ্ছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রিজার্ভ চুরি নিয়ে নিউ ইয়র্কে মামলা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিবেদক : রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামলাটি হবে নিউ ইয়র্কে। মামলায় ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, মামলা করার বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে ড. ফরাস উদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, এখনই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় হয়নি। যখন সময় হবে তখন এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। 

ফামার্স ব্যাংক তাদের সংকট কাটাতে আইসিবি থেকে টাকা নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে এ বিষয়ে কী কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। একটা ব্যাংক ফেল মানে অনেক সমস্যা। যেকোনো দেশের জন্যই এটা বড় সমস্যা।

এর আগে বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ভূমিকার জন্য ফিলিপিন্সের রিজল কমার্সিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলা করার হবে।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের আরসিবিসিতে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।

শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে। বিষয়টি সময়মত অর্থমন্ত্রীকেও অবহিত করা হয়নি। দীর্ঘদিন বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল।

ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকের একটি শাখা হয়ে বেরিয়ে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এক ক্যাসিনো মালিকের ফেরত দেওয়া দেড় কোটি ডলার বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিয়েছে ফিলিপিন্স।

এ ঘটনায় রিজল ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার জরিমানাও করেছে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই জরিমানার অর্থ পরিশোধ করলেও বাংলাদেশকে বাকি অর্থ ফেরতে কোনো দায় নিতে নারাজ ব্যাংকটি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক মামলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করায় অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া গতিশীল হবে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বিলম্বে হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। না হলে অন্য সদস্য দেশগুলোও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের ওপর আস্থাহীনতায় ভুগতো।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়