ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সহায়ক নীতিমালার অভাবে ওয়ারহাউজ সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫০, ১৩ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সহায়ক নীতিমালার অভাবে ওয়ারহাউজ সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশে  কৃষিপণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্য সংরক্ষণে ওয়ারহাউজ বা স্টোরেজ নীতিমালা নেই। ফলে অন্যান্য পণ্যের সংরক্ষণে ওয়ারহাউজ বা স্টোরেজ সম্প্রসারণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)’র সহায়তায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ লজেস্টিকস কস্ট স্টাডি (ওয়ারহাউজ এবং স্টোরেজ)’ শীর্ষক গবেষণার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের লিড ইকোনোমিস্ট চার্লস কোনাকা এবং নাইট ফ্যাঙ্ক-এর পরিচালক সুগাতা সরকার গবেষণার তথ্য উপস্থাপন করেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালন ও সম্প্রসারণে পণ্য সংরক্ষণ এবং ওয়ারহাউজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বাংলাদেশে এ খাতের জন্য একটি নীতিমালা রয়েছে যেটি ১৯৫৯ সালে প্রবর্তন করা হয়েছিল। এ নীতিমালায় শুধু কৃষিপণ্য সংরক্ষণে ওয়ারহাউজ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তবে সময়ের পরিক্রমায় কৃষিপণ্য ছাড়াও অন্যান্য পণ্যের সংরক্ষণে ওয়ারহাউজ বা স্টোরেজের বিকল্প নেই। এমতাবস্থায় বিদ্যমান নীতির সংস্কার অথবা এ খাতের বিকাশের লক্ষ্যে নতুন একটি নীতিমালা প্রণয়ন একান্ত আবশ্যক।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, বর্তমান সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালন ও সম্প্রসারণে পণ্য সংরক্ষণ এবং ওয়ারহাউজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারন্যাশনাল সাপ্লাই চেইন এবং আনুষঙ্গিক খাতে বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানে ২১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বর্তমানে ব্যবসা পরিচালনায় পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, বাজার সম্প্রসারণ, ওয়ারহাউজ ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া প্রভৃতি বিষয়সমূহে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়ে থাকে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দ্রুত সময়ে গ্রাহকদের কাছে গুণগত পণ্য পৌঁছানোর লক্ষ্যে ওয়ারহাউজ এবং পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অপ্রতুল পরিবহন ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না। ‘লজেস্টিক পারফরমেন্স ইনডেস্ক’ অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ৮৭তম, যেখানে ভারতের অবস্থান ৩৫তম। এমতাবস্থায় আমাদের এ খাতের উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। তাই অবকাঠামো খাত ও পণ্য পরিবহন খাতের উন্নয়নে জিডিপি’র ৫% বিনিয়োগের প্রস্তাব করছি। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুস সালাম বলেন, দেশের অর্থনীতির সার্বিক বিকাশে বেসরকারি খাত অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম, মোংলা এবং বেনাপোল বন্দর ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস চালু করার ফলে কনটেইনার জট কমেছে এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বেড়েছে। বাংলাদেশে আমদানি-নির্ভর বাণিজ্য কার্যক্রমের আধিক্য থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে প্রতিবছর ৬ থেকে ৭ লাখ খালি কনটেইনার অন্যান্য দেশে পাঠানো হয়, যার কারণে অনেক সময় বন্দরে কনটেইনার জট সৃষ্টি হয়ে থাকে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)’র বাংলাদেশ ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ওয়েন্ডি ওয়ারনার বলেন, বাংলাদেশে ওয়ারহাউজ নির্মাণের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জমি প্রাপ্তি এবং এ বিষয়ক নীতি প্রণয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সরকার মূলত কৃষি ও খাদ্যপণ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত খাদ্যগুদাম এবং স্টোরেজসমূহের আধুনিকায়নের জন্য বেসরকারি খাতের সহায়তা নিতে পারে।

আইএফসি প্রধান আরো বলেন, মানসম্মত ওয়ারহাউজ নির্মাণ করা সম্ভব হলে আন্তর্জাতিক ভ্যালু চেইনসমূহ তাদের পণ্য সংরক্ষণে বাংলাদেশকে ব্যবহার করবে, এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারিত হবে।

নির্ধারিত আলোচনায় ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ-এর সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. মাশরুর রিয়াজ, ডিসিসিআই’র পরিচালক খন্দকার রাশেদুল আহসান এবং ফরেন চেম্বারের আহ্বায়ক সৈয়দ সাদাকত হোসেন অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় ডিসিসিআই পরিচালক আন্দালিব হাসান, ইমরান আহমেদ, খন্দকার রাশেদুল আহসান, ইঞ্জি. মো. আল আমিন, নূহের লতিফ খান, প্রাক্তন সভাপতি এম এইচ রহমান, আসিফ ইব্রাহীম এবং মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ মে ২০১৮/এম এ রহমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়