ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফুল চাষ নতুন শিল্প হিসেবে অবদান রাখতে পারে

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৯, ১৬ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফুল চাষ নতুন শিল্প হিসেবে অবদান রাখতে পারে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ফুল চাষ নতুন শিল্প হিসেবে অবদান রাখতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

বুধবার রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ইউএসএআইডির এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রকল্পের সহযোগিতায় ডিসিসিআই আয়োজিত 'ফুলের চাষাবাদ খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা' শীর্ষক সেমিনারে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে সংগঠনটি। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআই সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন।

রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফুলের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রতিবছর সারা পৃথিবীতে ৪০ থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফুলের চাহিদা রয়েছে। পৃথিবীর ১৪৫টি দেশ ফুল উৎপাদন ও বাণিজ্যিক চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত।’

তিনি বলেন, ‘ফুলের বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবদান মাত্র দশমিক ৩ থেকে দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের ফুল রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে উক্ত অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফুল রপ্তানি হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয় এবং এ খাতের সঙ্গে প্রায় ২ লাখ লোক প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত।’ তাই ফুলের চাষসহ এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, নতুন নতুন চাষ পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ, কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, এয়ারকন্ডিশন সুবিধা সম্বলিত পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার প্রসারসহ এ খাতকে শিল্প হিসেবে ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সেমিনারে চায়না হর্টিকালচার বিজনেস সার্ভিসেস এর সভাপতি হেইডি ওয়ারনেট মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, ‘বাংলাদেশের ফুল চাষকে শিল্প হিসেবে রূপান্তরের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোতে জলাবায়ু এবং মাটির উর্বরতা অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে ফুলের চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরন এবং বাজারজাতকরন কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের ক্ষেত্রে এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে ভিয়েতনাম উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বর্তমানে প্রতিবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চীন ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফুল রপ্তানি করে থাকে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সারা পৃথিবীতে ফুলের বাজারের পরিমাণ হবে প্রায় ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশকে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষকে সফল করার জন্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, স্বল্প সুদে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন এবং নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপের আহ্বান জানান তিনি।

ডিসিসিআই-এর মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশে ফুল চাষকে কৃষিখাতের একটি উপ-খাত হিসেবে শিল্পনীতির আওতাভুক্ত করার সুযোগ রযেছে। বাংলাদেশ জলাশয়ে ভাসমান ব্যবস্থায় ফুলের চারা উৎপাদন এবং প্রতিপালন একটি বিকল্প সম্ভাবনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলোর গ্রিন হাউজের ন্যায় বাংলাদেশে এ ব্যবস্থার সুযোগ ও ব্যয় বিবেচনা করে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।’

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আল আমিন, প্রাক্তন সহ-সভাপতি এম আবু হোরায়রাহ, এভিসি প্রকল্পের চিফ অফ পার্টি পল বেনডিক, বাংলাদেশস্থ ইউএসএআইডি এর কনট্রাকটিং অফিসার অনীরুদ্ধ হোম রায়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মে ২০১৮/নাসির/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়