ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আউটসোর্সিংয়ে বদলে গেছে পাপ্পুর জীবন

আমিনুর রহমান হৃদয় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আউটসোর্সিংয়ে বদলে গেছে পাপ্পুর জীবন

আমিনুর রহমান হৃদয় : স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করে একদিন বাংলাদেশ পুলিশের আইটি শাখায় চাকরি করবেন তিনি। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য পড়াশোনাও করছিলেন পুরোদমে। কিন্তু হঠাৎ পারিবারিক সমস্যায় নষ্ট হয়ে যায় তার সাজানো স্বপ্ন। ১০ম শ্রেণীতেই পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। তখন তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। এরপর নানা বাড়িতে থেকে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে সারাদিন ঘুরাঘুরি ও আড্ডায় সময় পার করছিলেন।

একটা সময় বন্ধুরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরাঘুরি ও আড্ডা বন্ধ করে দেন। ভাবতে শুরু করেন নিজের জীবন নিয়ে। সময়টা তখন ২০১৪ সাল। তার বয়সও বেড়ে ১৮ বছরে পা দিয়েছে। প্রথমে ভাবলেন, ব্যবসা শুরু করবেন। কিন্তু ব্যবসা শুরু করার মতো কোনো অর্থই ছিল না তার কাছে। এরপর ইন্টারনেট ব্যবহার উপযোগী একটি মুঠোফোনেই আউটসোর্সিংয়ের ওপর নানা তথ্য পড়া ও ইউটিউবে ভিডিও দেখতে শুরু করেন।

ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে একজনের কাছ থেকে জীবনের প্রথম আউটসোর্সিংয়ের কাজটিও পেয়ে যান। তখন তার ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কোনোটাই ছিল না। মুঠোফোনেই প্রথম আউটসোর্সিংয়ের ছোট্ট কাজটি করে ফেলেন। যিনি এই কাজ দিয়েছিলেন, তিনি তার কাজে খুশি হয়ে তাকে পারিশ্রমিক ২ হাজার টাকা সহ একটি ল্যাপটপও উপহার দিলেন। এবারে কাজের প্রতি আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো। এভাবেই ২০১৪ সাল থেকে শুরু হলো তার আউটসোর্সিংয়ের কাজ করা। বলছিলাম শেরপুর জেলার ইফতেখার হোসেন পাপ্পু নামে এক স্বপ্নবাজ তরুণের কথা।

আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে বর্তমানে মাসে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন এই তরুণ। কথায় কথায় পাপ্পু জানালেন, বিডি আইটি জোন নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলেছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডোমেইন, হোস্টিং সেবা, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপিং, মোবাইল অ্যাপস তৈরি, বাল্ক এসএমএস ও আইপি ফোন সেবা দিয়ে আসছেন। স্বল্পমূল্যে এসব সেবার পাশাপাশি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট রিডিজাইন ও আইটি সমাধানের কাজ করে যাচ্ছেন।

তরুণ উদ্যোক্তা পাপ্পু বলেন, ‘আমি ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেখে ও ঢাকার কিছু বড় ভাইয়ের কাছে পরামর্শ নিয়ে নিজে নিজে আউটসোর্সিংয়ের কাজ শিখেছি। আউটসোর্সিং করে আমার ভাগ্য বদলে গেছে। আউটসোসিংয়ের কাজ করে যে কেউ অর্থ উপার্জন করে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে পারে। তবে অবশ্যই অধ্যবসায়ী হতে হবে।’

ইফতেখার হোসেন আরো বলেন, ‘যারা উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাবে আপওয়ার্ক ও বিল্যান্সের মতো প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হতে পারেনি, তাদের উচিৎ ফেসবুকে পর্যাপ্ত মার্কেটিং করা। আর তাতে করে প্রতি মাসে ঘরে বসে ১০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখেরও বেশি আয় করা সম্ভব।’

বিডি আইটি জোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই আইটি সেবা দিয়ে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন ইফতেখার পাপ্পু। স্বপ্ন দেখছেন তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ‘বিডি আইটি জোন প্রতিষ্ঠানকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমার প্রতিষ্ঠান বৃহৎ পরিসরে পৌঁছালে বেকার যুবকদের চাকরিও দিতে পারবো। তাই এখন সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যেই কাজ করছি আমি ও আমার স্বপ্নবাজ টিম।’




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ জুন ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়