ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাজেটে মূলধন সহায়তা কমছে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাজেটে মূলধন সহায়তা কমছে

কেএমএ হাসনাত : আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। চলতি অর্থবছর এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা ছিল। আগামী অর্থবছর এ বরাদ্দ ৫০০ খাতে কোটি টাকা কমিয়ে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ‘মূলধন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ’-শীর্ষ বাজেটে একটি খাত রয়েছে। মূলত: এখাত থেকেই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে প্রতি বছর আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা। আগের অর্থবছরেও এ খাতে একই পরিমাণ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি মূল কারণ হচ্ছে খেলাপী ঋণ। আশা করা যাচ্ছে, আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো খেলাপী ঋণ আদায়ে তৎপর হবে এবং এতে করে তাদের মূলধন ঘাটতি কমে যাবে। মূলধন ঘাটতি কমে গেলে তাদের আর্থিক সহায়তারও কম প্রয়োজন হবে। এসব কথা বিবেচনায় এনে আগামী অর্থবছরে মূলধন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ খাতে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৮০০ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী, রুপালী ও জনতা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা, ৬৩৭ কোটি টাকা এবং ১৬১ কোটি টাকা। একই সময়ে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও  রুপালী ব্যাংকের খেলাপী ঋণের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত ৪ অর্থবছরে সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য অর্থ দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় খাতের  ব্যাংক বেসিককে। এই ব্যাংককে মোট দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। বরাদ্দের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সোনালী ব্যাংকে। তাদের দেওয়া হয়েছে তিন হাজার ৩ কোটি টাকা। একইভাবে জনতা ব্যাংকে ৮১৪ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকে এক হাজার ৮১ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকে ৩১০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংককে ৭২৯ কোটি ৮৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে এ বছরের শুরুতে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংক অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ বরাদ্দ চায়। ব্যাংকগুলোর মধ্যে  মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ চায় সোনালী ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বৃহত্তম এই ব্যাংকটি মূলধন ঘাটতি পূরণে চেয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। এই ব্যাংকটিই ‘হল-মার্ক’ কেলেঙ্কারির কারণে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক জনতা মূলধন ঘাটতি পূরণে চেয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এই ব্যাংকটিও ‘অ্যাননটেক্স’ নামের একটি অখ্যাত গ্রুপকে নিয়ম নীতি না মেনে ৫ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।

দুর্নীতির কারণে আলোচিত অপর ব্যাংক বেসিক ব্যাংকও মূলধন পূরণে চেয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। এই ব্যাংকটি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনিয়ম ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়েছে। মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য রূপালী ব্যাংকের প্রয়োজন ১২৫০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, বিশেষায়িত ব্যাংক বলে বিবেচিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এ খাতে চেয়েছে যথাক্রমে ৭ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা এবং ৮০০ কোটি টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ জুন ২০১৮/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়