ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

সামাজিক সুরক্ষায় ব্যাপ্তি ও বরাদ্দ বাড়ছে

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ৭ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সামাজিক সুরক্ষায় ব্যাপ্তি ও বরাদ্দ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ব্যাপ্তি ও বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে এ প্রস্তাব দেন।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে হতদরিদ্র/অতিদরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও সমাজের সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্ত অংশের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিবছর মূল কর্মসূচিগুলোর আওতা ও পরিধি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা দুর্যোগপ্রবণ এলাকা, অতিদরিদ্র এলাকা এবং জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনা করছি।

তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৩৫ লাখ থেকে ৪০ লাখে বাড়ানো হবে। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতাভোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৬৫ হাজার থেকে ১৪ লাখে উন্নীত করা হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানী ভাতা ও উৎসব ভাতার পাশাপাশি বার্ষিক ২ হাজার টাকা হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা চালু করা হবে। এছাড়া জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিজয় দিবস উপলক্ষে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে বিশেষ সম্মানী ভাতা চালু করা হবে। অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ২৫ হাজার থেকে ১০ লাখ করা হবে। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির হার বাড়িয়ে প্রাথমিক স্তরে ৫০০ টাকার বদলে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকার বদলে ৭৫০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৭০০ টাকার বদলে ৮৫০ টাকা করা হবে। ভাতাভোগীর ৮০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৯০ হাজার করা হবে।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকার বদলে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৪৫০ টাকার বদলে ৮০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকার বদলে ১ হাজার টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১ হাজার টাকার বদলে ১ হাজার ২০০ টাকা করা হবে। বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীর সংখ্যা ৩৬ হাজার থেকে ৬৪ হাজারে উন্নীত করা হবে। এদের মধ্যে বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৩ হাজার থেকে ৪০ হাজারে এবং শিক্ষা উপবৃত্তির সংখ্যা ১১ হাজার থেকে ১৯ হাজারে উন্নীত করা হবে।

অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, ক্যান্সার, কিডনি, লিভারসিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজ্ড ও জন্মগত হৃদরোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজারে বৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে বৃদ্ধি, দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা মাসিক ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় বৃদ্ধি এবং ভাতার মেয়াদ ২ বছরের বদলে ৩ বছর নির্ধারণ করা হবে। পাশাপাশি ভাতাভোগীর সংখ্যা ৬ লাখ থেকে ৭ লাখে বৃদ্ধি করা হবে। কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তার আওতায় মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা বৃদ্ধি এবং ভাতা প্রদানের মেয়াদ ২ বছরের বদলে ৩ বছর নির্ধারণ করা হবে। পাশাপাশি ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লাখ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজারে বৃদ্ধি, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার প্রতিটিতে ২০ হাজার হিসেবে মোট ৪০ হাজার বৃদ্ধি করে ভিজিডি কার্যক্রমের উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৪০ হাজারে বৃদ্ধি করা হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের প্রচেষ্টায় বিগত এক দশকে নারী শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ এখনো যথেষ্ট নয়। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার ২০০৯ সালে ছিল ৫৪.৩ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা ৬৯.৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ ২০১০ সালের পরে তেমন বাড়েনি। ২০১০ সালের ৩৬.০ শতাংশের তুলনায় সাত বছরে বেড়েছে নগণ্য ০.৩ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে অংশগ্রহণের হার বাড়লেও শহরাঞ্চলে অংশগ্রহণের হার কিছুটা কমেছে। যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং আবাসন, সন্তানদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র, নারীবান্ধব গণপরিবহন ইত্যাদি সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর উৎপাদন সম্ভাবনার পূর্ণ ব্যবহার করতে আমরা বদ্ধপরিকর। গণপরিবহনে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট হারে আসন সংরক্ষণ ২০২০ সালে কার্যকর করার জন্য এবারে এক বছর সময় দেওয়া হচ্ছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৮/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়