ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অগ্রযাত্রায় পেপারলেস এনবিআর চায় সরকার

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ৪ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অগ্রযাত্রায় পেপারলেস এনবিআর চায় সরকার

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পেপারলেস করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। দেশের বৃহত্তম একক অফিস হিসেবে এনবিআরকে পেপারলেস করার পর অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও একই প্রক্রিয়ায় আনা হবে।

রোববার দুপুরে কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত নাগরিক সেবায় উদ্ভাবন ‘ইনোভেশন শোকেসিং’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে এনবিআর ও সঞ্চয় অধিদফতরের ১১টি উদ্ভাবনকে শোকেসিং এর আওতায় আনা হয়েছে। যেখানে একাধিক অ্যাপসহ ডিজিটাল সেবার আওতাধীন। অনুষ্ঠানে সেবার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন এনবিআর সদস্য (করনীতি) কানন কুমার রায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতি ছাড়া আর্থিক খাতকে দুর্নীতি মুক্ত করা সম্ভব নয়। এনবিআর যে ১১টি উদ্ভাবন করেছে, ১১টি সেবাকে একটি অ্যাপ বা একই ছাতার তলে নিয়ে আসা উচিত। উদ্ভাবনকে শুধুমাত্র একটি অফিসের মধ‌্যে সীমাবন্ধ না রেখে সকল অফিসকে এই সেবার আওতায় আনতে হবে। সিস্টেমকে যত দ্রুত সহজ করা যাবে, তত দ্রুত দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। এটা না হলে বিনিয়োগ বাংলাদেশে থাকবে না।

এনবিআরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পেপারলেস অফিস কতদিনে করা যাবে? ১ বছর, ২ বছর, ৫ বছর, ১০ বছর বা ২০ বছর? যত দ্রুত করা যায় ততই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এনবিআর পেপারলেস হয়ে অন‌্যান‌্য প্রতিষ্ঠানের অগ্রজ হয়ে থাকবে।

এনবিআর চেয়ারম্যানের উদ্দ্যেশে পরে মূখ্য সমন্বয়ক বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে পেপারলেস এনবিআর করতে একটি সময় নির্ধারণ করুন। আপনি যে সময় নির্ধারণ করবেন, যে পরিকল্পনা করবেন, আমরা অন্যান্য অফিসের জন্যও সেই সময় নির্ধারণ করবো।

তিনি আরো বলেন, যেভাবে আপনারা এনবিআরকে ডিজিটাল করছেন, কর আহরণ যেভাবে বাড়ছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের অগ্রগতি কেউ থামাতে পারবে না।

সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা পেপারলেস অফিস করার অগ্রযাত্রা যদি শুরু করতে পারি তবে অন্যান্য অফিসেও তা শুরু হবে। আজ আমাদের কর্মচারীরা উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সবচেয়ে বৃহৎ জনবল নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা যদি শুরু করতে পারি তাহলে অন্যান্য অফিসেও তা শুরু হবে।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআরে জনবল বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় আমরা এনবিআরের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চাই। সেবাকে ডিজিটাল করা সম্ভব হলে সহজেই তা সম্ভব।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আর্থিক খাতকে জনবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত করতে ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার বাধ্যতামূলক। ডিজিটাল পদ্ধতিতে রাজস্ব আদায় করলে তা কয়েক বছরেই দুই থেকে তিন গুণ বাড়বে। বর্তমানে ৬৪ জেলায় এনবিআরের কার্যক্রম বিস্তৃত। কিন্তু প্রতিটি উপজেলায় এর কার্যক্রম বিস্তৃত করা দরকার। আর তা সম্ভব হলে কয়েক বছরেই বর্তমান বাজেটের তিন গুণ বাজেট দেওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, এনবিআরকে অন্তত ৫০০ উপজেলায় যাওয়া উচিত। কারণ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বাজার আছে। যা থেকে প্রচুর রাজস্ব আদায় সম্ভব। এটা যদি করা যায় ও একই সঙ্গে ফিনান্সিয়াল অটোমেশন করা সম্ভব হয় তাহলে রাজস্বে প্রবৃদ্ধি আরো সাড়ে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

অনুষ্ঠানে আয়কর, কাস্টমস, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট/মূসক) ও সঞ্চয় অধিদপ্তরের ১১টি উদ্ভাবনকে শোকেসিং করা হয়। উদ্ভাবনীমূলক সেবার মধ্যে রয়েছে বেনাপাস, অডিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ডিমান্ড অ্যান্ড  কালেকশন টুল, ব‌্যাংক সার্চ টুল, অ্যাডভান্স ট‌্যাক্স রিমাইন্ডার টুল, এক্সেল শিটের মাধ‌্যমে আয়কর রিটার্ন প্রসেসিং, ভ‌্যাট ইস্ট, কাস্টমস ই-পেমেন্ট, ই-ইজিএম, এলটিইউ-ভ‌্যাট মোবাইল অ‌্যাপ ও ই-সেভিংস।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ নভেম্বর ২০১৮/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়