ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিবহনে চ্যালেঞ্জ বেড়েছে’

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিবহনে চ্যালেঞ্জ বেড়েছে’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিবহন ব্যবস্থায় বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকারদের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আরো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোববার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘ট্রান্সপোর্ট ডকুমেন্টস ইন ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বাই ব্যাংকস : চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিল অব লেডিং, এয়ারওয়ে বিল, ট্রাক রিসিপ্টের বিপরীতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যাংকারদের সতর্ক হতে হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, শুল্ক বিভাগ, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, শিপিং লাইন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। যাতে বাণিজ্য সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (ট্রেনিং) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব। ১০ সদস্যের গবেষণাদলে ছিলেন- বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাইউম, উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ পাল ও  মোক্তার হোসেন, বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক অন্তরা জেরীন ও তোফায়েল আহমেদ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদুর রহমান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ টি এম নেছারুল হক এবং ওসান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার ফয়জুর রহমান।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজার এবং প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-সুবিধায় গুণগত পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক পরিবর্তন এবং ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত একটি নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। যা সংশ্লিষ্টদের খুব উপকারে আসবে।

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, আমদানি-রপ্তানির আকার ক্রমেই বাড়ছে। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত জটিলতাও বাড়ছে। সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি আলাদা রোডম্যাপ তৈরি করে সমাধান করতে হবে।

পূবালী ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, শুল্ক বিভাগে ডেট এক্সপায়ার ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো ব্যাংককে ফেরত দিতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে ফরেন এক্সচেঞ্জ লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব-উল-আলম বলেন, ট্রান্সপোর্ট ডকুমেন্টস উন্নত বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ না হলেও বাংলাদেশের মতো দেশগুলো খুব গুরুত্ব দেয়। কারণ, এ ধরনের ডকুমেন্টের সঙ্গে রপ্তানির হিসাব এবং ঋণ সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য পাওয়া যায়। এ কারণে এসব তথ্য আরো সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা জরুরি।

কাস্টমস ভ্যালুয়েশন অ্যান্ড ইন্টারনাল অডিট কমিশনারেটের কমিশনার ড. মঈনুল খান বলেন, বাণিজ্যভিত্তিক অর্থপাচার মোট অর্থপাচারের ৮০ শতাংশ। অর্থপাচরের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ব্যাংকের সঙ্গে শুল্ক বিভাগের সমন্বয় জরুরি। কারণ, এক পণ্যের আড়ালে ভিন্ন পণ্য আনছে, এ ধরণের অভিযোগ আছে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন বলেন, বাণিজ্য সংক্রান্ত জটিলতা বছরের পর বছর চলছে। কিন্তু কোনো সমস্যারই তেমন সমাধান হয়নি। সব অংশীজনদের নিয়ে একটি কর্মী দল গঠন করে সময়োপযোগী সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি।

ওসান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ফায়েজ খোন্দকার বলেন, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে বাণিজ্যভিত্তিক যেসব সমস্যা তার সমাধান করতে হবে। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ হবে।

সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, আগামী দিনে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বাণিজ্য আরো সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ডিসেম্বর ২০১৮/নাসির/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়