ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

স্মরণে কীর্তিমান নজরুল ইসলাম

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্মরণে কীর্তিমান নজরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্পের পথিকৃৎ ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার দুপুরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ওয়ালটন গ্রুপের করপোরেট অফিস প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।  এছাড়া ওয়ালটন গ্রুপের সিস্টার কনসার্ন সব অফিস, কারখানা ও দেশব্যাপী সব ওয়ালটন প্লাজায় একযোগে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের বড় ছেলে এসএম নূরুল আলম রেজভী তাঁর পিতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

নজরুল ইসলাম স্মরণে সোমবার দুপুরে রাইজিংবিডি ডটকম কার্যালয়ে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাইজিংবিডিতে কর্মরতরা উপস্থিত হয়ে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন খিলগাঁওয়ের ঝিলপাড়ে অবস্থিত জামায়াতুল সুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক আলহাজ মাওলানা মুফতি মুহিবুর রহমান।

দোয়া অনুষ্ঠানের আগে এস এম নজরুল ইসলামের বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়।

 



অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাইজিংবিডির সম্পাদক মোহাম্মদ নওশের আলী বলেন, বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্পের পথিকৃৎ ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম নজরুল ইসলাম। সুদূরপ্রসারি চিন্তাশীল এই মানুষটি তার গ্রাম গোসাই জোয়াইরকে অনেক ভালোবাসতেন। তাই দেশের বৃহৎ ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা হয়েও গ্রামেই জীবন যাপন করতেন। তার প্রতিষ্ঠিত ওয়ালটন এখন বিশ্বের কাছে শিল্পসমৃদ্ধ বাংলাদেশের ইতিবাচক ইমেজ তুলে ধরছে। বাংলাদেশও যে পারে বিশ্বের কাছে সেটিই প্রমাণ করছে মেড ইন বাংলাদেশ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য।

তিনি বলেন, প্রথমে বাবা এস এম আতাহার আলী তালুকদারের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত হলেও স্বাধীনতার পর আলাদাভাবে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ব্যবসা শুরুর প্রাথমিক অবস্থায় তিনি নানাবিধ প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। কিন্তু তার সততা ও কর্মনিষ্ঠার মাধ্যমে সব প্রতিকূলতা সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত ওয়ালটন এখন দেশের গন্ডি ফেরিয়ে বিশ্বের ২০টি দেশে পন্য রপ্তানি করছে। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ওয়ালটন আরো এগিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা আমাদের।

নজরুল ইসলাম আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তিনি যে অসাধারণ কীর্তি গড়েছেন তার মাধ্যমে আমাদের মাঝে চির জাগরুক থাকবেন। আমরা তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মাহামুদ তার বক্তব্যে বলেন, ব্যক্তি এস এম নজরুল ইসলামকে আমরা অনেকেই দেখিনি, আমাদের অনেকের সাথে পরিচয়ও ছিল না। কিন্তু তাঁর নামের সাথে শুধু আমরা যারা ওয়ালটনে চাকরিরত আছি তারা নয়, বাংলাদেশের অনেকেই পরিচিত। তিনি দেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্পের পথিকৃৎ। কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা খ্যাতি বা স্বীকৃতির পেছনে ছোটেন না। প্রতিদানের প্রত্যাশা না করে, নীরবে-নিভৃতে নিজের কাজ করে যান। যা একসময় শুধু কাজ থাকে না, হয়ে ওঠে মহৎ সেবা। যার আলোয় আলোকিত হয় মানুষ, দেশ ও জাতি। তেমনি একজন মানুষ ছিলেন আলহাজ্ব এস এম নজরুল ইসলাম।

 



তিনি বলেন, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ এখন বাংলাদেশের একটি অহংকারের এবং সম্মানের স্লোগান। এই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করা খুব সহজ ছিল না, কিন্তু এস এম নজরুল ইসলাম বলা যায় অসাধ্য সাধন করেছেন।  এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইলেকট্রনিক্স এবং ইলেকট্রিক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধিত্ব করছে শুধুমাত্র ওয়ালটনের মতো একটি জায়ান্ট ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের মাধ্যমে। এর যাবতীয় বাহ্বা পাওয়া দাবিদার নজরুল ইসলাম। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই, আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

কর্মজীবনে সফল ব্যক্তিত্ব আলহাজ এসএম নজরুল ইসলাম ১৯২৪ সালের ৭ মে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম এস এম আতাহার আলী তালুকদার এবং মাতার নাম মোসাম্মৎ শামছুন নাহার।

ওয়ালটনের স্বপ্নদ্রষ্টা এই মানুষটি ২০১৭ সালের এই দিনে না ফেরার দেশে চলে যান। রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর তাঁর নিজ গ্রাম গোসাই জোয়াইরে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসান/সাওন/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়