ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ উদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হবে

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ৯ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ উদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হবে

বিশেষ প্রতিবেদক : দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে যত ঋণ অবলোপন করা হয়েছে তা উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি বন্ধ করতে প্রয়োজনে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা হবে। পাশাপাশি ‘ব্লক চেইন টেকনোলজি’ প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্বিতীয় দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ঋণ নিয়ে বিপুল অংকের অর্থ ঋণ গ্রহীতারা আর ফেরত দেননি। তারা ঋণ অবলোপনের নামে এসব ঋণ পরিশোধ করেননি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিপুল অংকের অর্থ পরিশোধ না করে এসব অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আইনের সংস্কারের মাধ্যমে এসব অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। যারা অর্থ ফেরত দেবেন তাদের কিছু করা হবেনা। তবে যারা ঋণের অর্থ ফেরত দেবেন না তাদের প্রতি যতটা রূঢ় হওয়া দরকার তা করা হবে। এ বিষয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটি সম্পূর্ণ বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আর্থিক খাত নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। এসব কাটিয়ে কিভাবে এখানে শৃংখলা ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়েই মূলত: ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের যে আইন রয়েছে সেখানে কিছু কিছু বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ফলে ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা হলে  ওইসব ফাঁক-ফোকড় ধরে উচ্চ আদালতের স্মরণাপন্ন হন।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘যে কোন নাগরিকের অধিকার রয়েছে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেওয়ার। আর আমাদের যে কাজটি করতে হবে তা হলো, চিহ্নিত ওইসব বিচ্যুতি বন্ধ করতে আইনের সংস্কার করা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আইনের সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিধি এবং উপবিধির সমস্যা রয়েছে সেগুলো ঠিক করা সহজ হবে। এগুলোর জন্য সংসদে যাওয়ার দরকার হবেনা।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি বা বেসরকারি যে কোন ব্যাংক থেকেই ঋণ নিলে তা সুদ সমেত সময়মত ফেরত দিতে হবে। কারণ এগুলো জনগণের অর্থ। দেশে খেলাপি ঋণ আদায়ের আইন আছে, সেসব আইন বাস্তবায়ন করা গেলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক কমে আসতো। আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে আমাদের জোর দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে জনবলের সমস্যা রয়েছে। আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ চালাতে হচ্ছে। এতে জবাবদিহিতার সমস্যা হচ্ছে। সরকারি চাকরিজীবী হলে তার জবাবদিহিতা থাকে। এ বিষয়টি গুরত্বের সঙ্গে দেখা হবে। একই সঙ্গে আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ব্লক চেইন টেকনোলজি’ প্রবর্তন করা হবে। এ পদ্ধতিটি এখন সারা বিশ্বে ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের দেশেও এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। আর এ জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’

ব্যাংক কমিশন গঠন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে সব কারণে ব্যাংক কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেসব কারণ আমরা জেনে গেছি তাই এখন আর এ ধরনের কোন কমিশন গঠন করার প্রয়োজন হবে না।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ জানুয়ারি ২০১৯/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়