ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে খালেদার চিকিৎসার আবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক : খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না এবং সমস্যাগুলো দিন দিন বাড়ছে, এ কথা জানিয়ে ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করার আবেদন করেছেন তার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার।
মঙ্গলবার ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে এ আবেদন করেন তিনি।
মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়াকে এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে তাকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। অর্থাৎ সমস্যাগুলো সম্পূর্ণ নিরাময়ের আগেই তাকে জেলে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি (খালেদা জিয়া) প্রচণ্ড অসুস্থ। তিনি নিজেই আমাদের কাছে তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা কোন কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ, তা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সুচিকিৎসার লক্ষ্যে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসার আদেশ দিন।
ওই সময় আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবীকে হাইকোর্টের চিকিৎসা সংক্রান্ত আদেশ আদালতে দাখিল করতে বলেন। পরে এ বিষয়ে আদেশ দেবেন বলে জানান বিচারক।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ২৭ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় তার সঙ্গে গৃহকর্মী ফাতেমাও ছিলেন। খালেদা জিয়া আদালতকক্ষে প্রবেশের পর বিচারক এজলাসে উঠলে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নিজের পক্ষে সাড়ে ১২টা থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অব্যাহতির বিষয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আমি আজও বুঝতে পারি নাই, কী কারণে আমাকে আসামি করা হয়েছে? বলা হচ্ছে, আমি একটি মতামত দিয়েছি। আজও দেখতে পারলাম না সে মতামত। আমি কোনো মতামত দেইনি। ওটা দিয়েছে আইন মন্ত্রনালয়। সেখানে আমিসহ আটজন স্বাক্ষর করেছিলাম। কিন্তু আসামি হয়েছি আমি। বাকি সাতজনকে না সাক্ষী না আসামি করা হয়েছে।
প্রাক্তন এ আইনমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী কোনো মামলায় অনুসন্ধানের জন্য কর্মকর্তা ১৫ দিন করে ৩০ দিন সময় পবেন। যদি শেষ না করতে পারেন, তবে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিলে তিনিও ১৫ দিন করে ৩০ দিনের সময় পাবেন। তিনিও শেষ না করতে পারলে অনুসন্ধান বন্ধ হবে। এ মামলায় বিধি লঙ্ঘন করে প্রায় ১ বছর অনুসন্ধান চালানো হয়। বিধি লঙ্ঘন করায় এ মামলা এখন চলা মানে সময় নষ্ট করা। তাই আদালতের উচিত হবে, এ মামলার কার্যক্রম এই মুহূর্তে শেষ করা। সে ক্ষেত্রে দুদক নতুন করে অনুসন্ধান করে আবার মামলা করতে পারেন। শুনানিতে বিএনপির এ নেতা অনুসন্ধান ও তদন্তের পর্যায়ে তার বক্তব্য না শুনে কমিশন বেআইনি কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন এবং এর সমর্থনে উচ্চ আদালতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আদালতে দখিল করেন।
মওদুদ আহমদের শুনানি শেষ হওয়ার পর আসামি খন্দকার শহীদুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী আসাদুজ্জামান বেলা ২টা পর্যন্ত আংশিক শুনানি করেন। আদালত পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন ।
এদিকে, এদিন শুনানিকালে খালেদা জিয়া কোনো কথা বলেননি। তবে অনেক আইনজীবীকে ডেকে পরামর্শ করতে দেখা যায়।
এ নিয়ে মামলাটিতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে সাতটি ধার্য তারিখ চার্জ গঠনের শুনানি হলো। তবে মামলাটিতে এখনো খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি হয়নি।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন