ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

বৈশাখ নয়, বৈরী আবহাওয়া সবজির দাম বাড়ার কারণ

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১১, ১৩ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বৈশাখ নয়, বৈরী আবহাওয়া সবজির দাম বাড়ার কারণ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : রাজধানীতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। বৈশাখ ও রমজান উপলক্ষে নয়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবজির দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টির কারণে বেশিরভাগ সবজি পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির কারণে পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। তাই পাইকারী ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আসন্ন রমজান বা পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে কোনো কিছুর দাম বাড়ানো হয়নি।

এদিকে সবজির ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়ায় ক্ষুদ্ধ ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, প্রতি বছর রোজা আসার এক মাস আগে থেকে বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। একটা সিন্ডিকেট সব সময় অধিক মুনাফার জন্য সদা প্রস্তুত।  এভাবে চলতে থাকলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষদের এক সময় না খেয়ে মরে যেতে হবে। আসলে বাজারে কার্যকরী মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ীরা এভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আর ভুগতে হচ্ছে আমাদের।

মিরপুর ১ নম্বর বাজারে সবজি কিনতে আসা রেস্টুরেন্ট কর্মচারী রায়হান বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই বাজারে সব ধরনের সবজির দাম চড়া। এর মধ্যে কিছুটা হলেও কম দামে পাওয়া যাচ্ছিল পেঁপে ও টমেটো, সিম। কিন্তু রোজা কাছাকাছি চলে আসায় এখন সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে।’

শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ঝিগাতলা, হাতিরপুল ও মিরপুর-১ বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজার ভেদে বেশিরভাগ সবজির দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি পোটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা (দুই সপ্তাহ আগের মূল্য ৬০ থেকে ৬৫), এ ছাড়া প্রতি কেজি হিসেবে বরবটির বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, ঢেঁড়স ৫০ টাকা। কচুর লতি ৫০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৭০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, বাঁধাকপি বিক্রি ৬০ থেকে ৭০ টাকা (প্রতি পিস), ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা (প্রতি পিস)।

এদিকে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁপে ও গাজর। পেঁপে আগের মতোই ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে  ৬০ টাকায়।

অপরিবর্তিত রয়েছে চালের দাম। এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি নাজির চাল ৫৮  থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮ নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া আমদানিকৃত প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা, ছোলা বুট ৭০ টাকা, ডাল ৭০ থেকে ৯০ (গ্রেড অনুযায়ী),  লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫, খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, পেয়াজ দেশি ৩০ টাকা, ইন্ডিয়ান ২৫ টাকা, রসূন ৬০ থেকে ১০০, আদা ১০০, আলু ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে সবধরনের ডিমের দাম। এ ছাড়া মুরগির ডিম প্রতি ডজনে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। হাঁসের ডিম ১৫৫ টাকা, দেশী মুরগির ডিম ১৭০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। খোলা সয়াবিন তেল ৯০ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটারের প্রতি রূপচাঁদা ৪৮০ টাকা, পুষ্টি ৪৭০ টাকা, তীর ৪৮০ টাকা, ফ্রেস ৪৮০ টাকা, বসুন্ধরা ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খোলা সরিষার তেল প্রতি কেজি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে সরকার নির্ধারিত মূল্যের তোয়াক্কা না করে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা করে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৮৮০ টাকা। বয়লার মুরগির কেজি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, কক মুরগির কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া তেলাপিয়া মাছ কেজি প্রতি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ এপ্রিল ২০১৯/নাসির/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়