ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পাঠ্যবই হতে হবে নির্ভুল ও মানসম্পন্ন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৯, ৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাঠ্যবই হতে হবে নির্ভুল ও মানসম্পন্ন

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতেই বিনা মূল্যে নতুন পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এটি করা হচ্ছে। নতুন বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরাও বেশ খুশি। কিন্তু কোমলমতি শিশুদের হাতে যেসব বই তুলে দেওয়া হয়েছে সেসবের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু ভুল-ভ্রান্তি ও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। শুধু ভুল নয়, ছাপার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মলাটে চাকচিক্য থাকলেও বইয়ের ভেতরে ছাপা অত্যন্ত নিম্নমানের।

তবে পাঠ্যবইয়ে ভুলের অভিযোগ এবারই প্রথম উঠেছে, তা কিন্তু নয়। কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ভুল ধরা পড়ছে। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। পাঠ্যবইয়ে যদি ভুল থাকে তাহলে তারা কি শিখবে? এতে শিক্ষার মান রক্ষাই বা কীভাবে হবে? , বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। এসব ভুল সংশোধন করে বিতরণ করা বই প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। কেননা যে স্তরে শিক্ষার ভিত গড়ে উঠবে, সেই স্তরেই যদি ভুল থাকে তাহলে শিক্ষার্থীরা শৈশব থেকেই ভুল শিক্ষা পাবে।

দেখা গেছে পাঠ্যবইয়ে একদিকে যেমন বানানে ভুল রয়েছে, তেমনি ভুল রয়েছে বাক্য ব্যবহারেও। এছাড়া পদ্য বিকৃতিরও অভিযোগ উঠেছে। যেমন তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে কুসুমকুমারী দাশের একটি বিখ্যাত কবিতা ছাপা হয়েছে। ‘আদর্শ ছেলে’ নামের এই কবিতার মূল লাইনটি হচ্ছে এরকম- ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে’। কিন্তু’ সেখানে লেখা হয়েছে ‘আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে।’  অর্থাৎ কবি যে ‘ছন্দ’ এবং ‘অন্ত্যমিল’ রেখে কবিতার লাইন লিখেছেন, তা পাল্টে দেওয়া হয়েছে। ‘সে ছেলে কে চায়’, এর পরিবর্তে ছাপা হয়েছে ‘সে ছেলে কে চাই।’ আবার ‘হাতে প্রাণে খাট সবে’-এর বদলে লেখা হয়েছে, ‘মনে প্রাণে খাটো সবে।’

এটি অনস্বীকার্য কয়েক বছর ধরে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ করা বর্তমান সরকারের এক বড় সাফল্য। বিনামূল্যে বই দেওয়ার কারণে অনেক দরিদ্র অভিভাবকের আর্থিক সাশ্রয় হয়।  কিন্তু মহৎ এ উদ্যোগ যদি ভুলের কারণে ম্লান হয়ে যায় তবে তা হবে অত্যন্ত পরিতাপের।

পাঠ্যবইয়ে নানা ভুল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি কমিটি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। একই সঙ্গে ভুল সংশোধনের পাশাপাশি নতুন শিক্ষাবর্ষের বই পরিমার্জনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

আমাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ভুল সংশোধনে উদ্যোগ নেবেন। ভবিষ্যতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশের যাবতীয় কার্যক্রমের দায়িত্ব দেবে প্রকৃত যোগ্য, দক্ষ ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের। সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভুল সংশোধনের কার্যক্রম সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের কাছে দ্রুত পরিমার্জিত বই পৌঁছে দেওয়া হবে। শতভাগ নির্ভুল পাঠ্যবই প্রণয়ন ও মুদ্রণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।


 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ জানুয়ারি ২০১৭/এনএ/টিআর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়