ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ডায়রিয়া রোধে প্রয়োজন সচেতনতা

শাহনেওয়াজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪৩, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডায়রিয়া রোধে প্রয়োজন সচেতনতা

মেহেরপুর সদর হাসপাতালের বারান্দায় শনিবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা দেন চিকিৎসক (ছবি: মহাসিন আলী)

মেহেরপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হাসপাতালে ঠাঁই নেই শিরোনামে শনিবার (২৮ জানুয়ারি ২০১৭) রাইজিংবিডি ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মেহেরপুর জেলায় হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু। সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২০টি শয্যার বিপরীতে শনিবার সকাল পর্যন্ত রয়েছে ৬০টি শিশু । জায়গা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের বারান্দায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

মেহেরপুরে মানুষ গণহারে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন, কষ্ট পাচ্ছেন- এটা দুঃখজনক। চিকিৎসকদের মতে, আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সাধারণত প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিলের দিকে ডায়রিয়া-কলেরা রোগ বেশি দেখা দেয়। এই সময়ে অর্থাৎ গরমকালে  একদিকে সুপেয় পানির চাহিদা বেড়ে যায় অন্যদিকে পানির উৎস সংকুচিত হয়ে পড়ে। এতে নিরাপদ পানির সংকট দেখা দেয়। আর অনিরাপদ পানির কারণেই ডায়রিয়া ও কলেরার মতো রোগ ব্যাপক আকারে দেখা দেয়।

মেহেরপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। সাধারণত যে সময়টাতে ডায়রিয়া হয় তার অনেক আগেই অর্থাৎ শীতের ঠাণ্ডা কেটে না যেতেই এভাবে মানুষ গণডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন- এটা চিন্তার বিষয় বৈকি। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগকে খেয়াল করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত যে প্রভাব আবহাওয়ার ওপর পড়েছে, তাতে অসুখ-বিসুখের সময়েরও হেরফের হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, এটা ভাইরাসজনিত একটা রোগ। এই রোগ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য, বিশেষ করে শিশুদের নিরাপদ রাখার জন্য মায়েদের বেশি সচেতন হতে হবে।

অনিরাপদ পানি পান ও পচা-বাসি খাদ্য গ্রহণ করার কারণে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে এবং ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। এই রোগ মূলত পানিবাহিত। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এবং বর্ষা ও বন্যার সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বের হয়ে যায় এবং শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হয়। ফলে আক্রান্তরা দ্রুত দুর্বল হয়ে যায় এবং নেতিয়ে পড়ে। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ রোগ কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে খুব আতঙ্কের নয়। এ রোগে আক্রান্ত হলে পরিমাণমতো খাবার স্যালাইন খেতে হবে।

ডায়রিয়া আমাদের দেশে অন্যতম একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা। এই রোগ সব বয়সের মানুষেরই হতে পারে। তবে শিশুরা আক্রান্ত হয় বেশি। প্রতিবছর ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু ডায়রিয়া এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অপুষ্টিতে মারা যায়। এই রোগ সম্পর্কে সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে সারিয়ে তোলার জন্য জরুরি হলো সঠিক চিকিৎসা, পরিচর্যা ও পরামর্শ। মেহেরপুরে ও সর্বোপরি সারা দেশে এই রোগ নিরাময়ে এবং প্রতিরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ জানুয়ারি ২০১৭/শাহনেওয়াজ/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়