ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জঙ্গিবাদ নির্মূলে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪২, ১৮ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জঙ্গিবাদ নির্মূলে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে একাধিক হামলা চালিয়েছে জঙ্গীরা। সর্বশেষ হামলার চেষ্টা হয়েছে রাজধানীর উত্তরার আশকোনা ও খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ায়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শুক্রবার আশকোনায় হজ ক্যাম্পের কাছে নিজের কাছে রাখা বোমা বিস্ফোরণে এক যুবক নিহত হয়। বেলা একটার দিকে সেখানে প্রস্তাবিত র‌্যাব সদর দপ্তরের সীমানাপ্রাচীর টপকে এক যুবক ভেতরে প্রবেশ করার পর তাকে চ্যালেঞ্জ করে র‌্যাব। তখন ওই যুবক তার শরীরের সঙ্গে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।

আশকোনায় হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই পরের দিন শনিবার ভোর রাতে  খিলগাঁওয়ে র‌্যাবের চেক পোস্টে হামলার চেষ্টা করেছে এক যুবক। হামলাকারীর দেহে বিস্ফোরক বাঁধা ছিল বলে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মোটরসাইকেল আরোহী ওই ব্যক্তি চেক পোস্টে ঢুকে পড়লে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। তখন সে হাত থেকে কিছু ছুড়ে মারার চেষ্টা করলে  বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালালে সে নিহত হয়।

এর আগে বুধবার রাতে চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় একটি দোতলা বাড়ি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়। আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ও গুলিতে এক নারীসহ চার জঙ্গীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ওই অভিযানের সমাপ্তি ঘটে। কুমিল্লার চান্দিনায় যাত্রীবাহী একটি বাস থেকে নেমে দুই জঙ্গী বোমা হামলা চালায় হাইওয়ে টহল পুলিশের ওপর। পুলিশ প্রতিরোধ করলে জঙ্গিরা বোমা হামলা করে পালিয়ে যায়। পরে জনগণ ধাওয়া দিয়ে তাদের ধরে ফেলে। এছাড়া গত সোমবার টঙ্গীতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নিতে প্রিজনভ্যানে হামলা চালানো হয়। এখানেও চাপাতি ও হাতবোমাসহ দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সরকার ধর্মীয় উগ্রপন্থাসহ সব রকম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে আনসার আল ইসলামসহ কয়েকটি জঙ্গী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জঙ্গীদের হাতবোমা, অস্ত্রশস্ত্র, জিহাদী বইসহ আটক করা হচ্ছে। গোলাগুলিতে নিহত ও আহত হওয়ার খবরও আছে। এত কিছুর পরও তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া শনিবার এক জঙ্গিবাদবিরোধী অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘এসব ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। ‘হামলাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তিনি বলেন, ‘দেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই, তবে তাদের মতাদর্শী আছে। তারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এসবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সব সমস্যা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে।’

আমরাও চাই ধর্মের নামে এসব অপতৎপরতা বন্ধ হোক। কোনোভাবেই জঙ্গিদের এ অপতৎপরতা মেনে নেওয়া যায় না। তবে জঙ্গিবাদ নির্মূলে জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে জঙ্গিবাদ রুখতে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সদা সতর্ক এবং মানুষের জানমালের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মার্চ ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়