ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নস্যাৎ করতে হবে জঙ্গিদের অপতৎপরতা

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৪ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নস্যাৎ করতে হবে জঙ্গিদের অপতৎপরতা

আবারো এক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়ে অভিযান চালিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এবার রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি উপজেলায় একটি আস্তানায় দুই দিন ধরে অভিযান চালানো হয়। ‘অপারেশন সানডেভিল’ নামের ওই অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি । পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিরা নিজেরাই আত্মঘাতী হয়েছে। অভিযান চলার সময় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করে এক নারী জঙ্গি। পরে আস্তানা থেকে ১১ বোমা ও একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

দেশজুড়ে জঙ্গি দমন অব্যাহত থাকার মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে জঙ্গিদের আস্তানার খবর মিলছে। এবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছে এ ধরনের আস্তানা আরো থাকতে পারে। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো, জঙ্গিরা পরিবার পরিজনসহ নিজেদের বাসস্থানকে জঙ্গি আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছে। দেশজুড়ে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক যে বেশ শক্তিশালী, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আত্মঘাতী প্রবণতা ও পারিবারিক ইউনিট গড়ে তোলার বিষয় দুটি জঙ্গিবাদে যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিদের আস্তানা ঘেরাওয়ের পর তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। বরং তারা পাল্টা হামলা করেছে কিংবা অথবা আত্মহনন করছে।  এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, জঙ্গিদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ করা হচ্ছে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে। ফলে তারা নির্দ্বিধায় প্রাণ দিচ্ছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

গোদাগাড়ীতে নিহত পাঁচ জঙ্গির চারজনই একই পরিবারের সদস্য- সাজ্জাদ আলী (৫০), তার স্ত্রী বেলী আক্তার (৪৫) এবং ১৮ ও ১৭ বছরের এক ছেলে ও এক মেয়ে। নিহত অপর জঙ্গি স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রকৌশলী এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় আবদুল মতিন নামে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী নিহত হয়েছে যা দুঃখজনক। ভবিষ্যতে জঙ্গি দমন অভিযানে আরও সতর্ক থাকতে হবে, তা না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

জঙ্গি তৎপরতা সরকারের জন্য ক্রমেই আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিচ্ছে। জঙ্গিবাদের সমস্যা শুধু বাংলাদেশে নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ সমস্যা রয়েছে। বৈশ্বিক এই সমস্যা নিরসনে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে সরকার। এ কারণে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সাফল্য দেখাচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরি জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে হলে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে জঙ্গিদের অপতৎপরতা নস্যাৎ করে দিতে হবে।

জঙ্গিবাদের পেছনে রয়েছে দেশি বিদেশি নানাচক্রও। জঙ্গিদের অর্থের উৎস বন্ধ করা জরুরি। বন্ধ করতে হবে অস্ত্রের সরবরাহও। এ ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে থাকতে হবে আরো সতর্ক অবস্থানে। সক্ষমতা বাড়াতে হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। তবে শুধু সশস্ত্র অভিযানের মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিরোধও গড়ে তোলা প্রয়োজন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মে ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়