ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গাইবান্ধায় কমছে নদ-নদীর পানি, বাড়ছে ভাঙন

মোমেনুর রশিদ সাগর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১২, ১৫ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গাইবান্ধায় কমছে নদ-নদীর পানি, বাড়ছে ভাঙন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

বন্যা কবলিত এলাকার পানিবন্দি মানুষ শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকট, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যার কবলে পড়েছেন।

ব্রহ্মপুত্র নদের পানির স্রোতে সদরের কামারজানি এলাকায় ভাঙনের মুখে পড়েছে স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

শনিবার ব্রহ্মপুত্র নদের ফুলছড়ি পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি ডেভিট কোম্পানিপাড়া পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া করতোয়া ও তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

স্থানীয়রা জানায়, গত বছরের ২৯ শে জুলাই ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার কমপক্ষে ২০ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এবারো ওই বাঁধটি পানির চাপে হুমকির মুখে পড়েছে।



গাইবান্ধা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  মাহাবুবর রহমান জানান, বাঁধের বেশ কিছু জায়গায় ইদুর গর্ত দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে সব গর্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আজ শনিবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বন্যা ও ত্রাণ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, এ পর্যন্ত জেলার ফুলছড়ি, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৩০ ইউনিয়নের ১৯৪ গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬০ হাজার ৩৩৮ পরিবারের  দুই লাখ ৪১ হাজার ২১৩ জন মানুষ।  কাঁচা রাস্তা ৮১ কিলোমিটার  এবং ২৫৪ হেক্টর পাট, আউশ, আমন বীজতলা ও শাক-সবজিরখেত পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্ন্যাতদের জন্য ৮২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র চলমান থাকায় চার হাজার ৯২০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ৮৫টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে ৩২৫ মেট্রিক টন চাল, ১৮ লাখ টাকা এবং চার হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে আরো ৩০ মেট্রিক টন চাল, ৫০ হাজার টাকা এবং দুই হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট।

তিনি ত্রাণ ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমে জেলার মিডিয়া কর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।



রাইজিংবিডি/ গাইবান্ধা/১৫ জুলাই ২০১৭ / মোমেনুর রশিদ সাগর/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়