ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ডিএনডি বাঁধে জলাবদ্ধতা

পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ দূর করুন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৯, ৮ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ দূর করুন

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) বাঁধ এলাকায় একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। স্বাভাবিক বৃষ্টিতেই ডিএনডি বাঁধের বেশিরভাগ এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। একনাগাড়ে দুই-তিনদিন বৃষ্টি হলেই এলাকার বাসিন্দাদের কষ্টের আর সীমা থাকে না। বছরের পর বছর ধরে তাদের এই দুর্ভোগ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এবারও বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ডিএনডি এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দাকে। পানিবন্দি মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে জীবনযাপন করছেন।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, বর্তমানে ডিএনডি বাঁধের অভ্যন্তরে বিভিন্ন এলাকার বহু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আর এ পানির সঙ্গে শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য, স্যুয়ারেজের ময়লা পানি মিশে পানিবন্দি মানষের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে বাসিন্দারা পানিবাহিত নানা রোগে ভুগছেন। সে সঙ্গে মশার উপদ্রবতো আছেই।

’৬০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে ডিএনডি বাঁধ তৈরি করা হয়। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল ৫৭ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বন্যামুক্ত অঞ্চল গড়ে তোলা এবং এ বন্যামুক্ত এলাকায় খালের পানি সেচের মাধ্যমে ইরি ধানসহ যাবতীয় ফসল ফলানো। কিন্তু আশির দশকের পর থেকে থেকে দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে এই অঞ্চলের। এলাকায় মানুষ জমি ক্রয় করে আবাসিক এলাকা গড়ে তুলতে শুরু করে। পাশাপাশি ছোট-বড় শিল্প কারখানা, ইটের ভাটা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন কলকারখানা গড়ে ওঠে। কিন্তু অপরিকল্পিত বসতি, রাস্তাঘাট, কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি গড়ে ওঠার ফলে এলাকায় নানা রকমের সমস্যা তৈরি হতে থাকে।

একসময় ডিএনডি বাঁধের ভেতরে কংস নদসহ বেশ কয়েকটি খাল ছিল। ইরিগেশন প্রজেক্টে সেচখাল হিসেবে ব্যবহৃত এ খালগুলোর অস্তিত্ব এখন আর নেই। বিলুপ্ত হয়ে গেছে কংস নদ। দখল-দূষণে অনেক খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। যে কারনে এখন বৃষ্টি হলে বা বর্ষার সময়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় এবং তা দীর্ঘ মেয়াদে থাকে। এ অবস্থার অবসান হওয়া জরুরি।

যতদূর জানা যায়, ডিএনডি বাঁধ সংস্কার এবং জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য গত বছরের শেষ দিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এই প্রকল্পের কাজ শুরুর পর আগামী বর্ষায় ডিএনডি বাঁধ এলাকায় জলাবদ্ধতা কমে আসবে, তবে পুরো ফল পাওয়া যাবে তিন বছর পর কাজ শেষ হলে। সেসময় এরকমই বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রায় এক বছরেও প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি।

ডিএনডি এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দার দুর্ভোগ যেন এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। তাদের এ দুর্বিষহ জীবন থেকে বের কের আনা জরুরি। এলাকার বিপর্যস্ত মানুষগুলোর স্বাভাবিক জীবনযাপনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি দখল হয়ে যাওয়া খাল উদ্ধার করতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষ দ্রুত গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জলাবদ্ধতা নিরসন করে ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ আগস্ট ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়