ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত ঢাবি : ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসব

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০২, ৩ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত ঢাবি : ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসব

আবু বকর ইয়ামিন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন শনিবার। সমাবর্তন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। গাউন পরে ক্যাম্পাসে দল বেঁধে ঘুরাঘুরি, স্মরণীয় করে রাখতে ছবি তোলাসহ নানা কাজে ব্যস্ত গ্রাজুয়েটরা।

শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তনে ১৭ হাজার ৮৭৫ জন গ্র্যাজুয়েট অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে ৮০ জন কৃতী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে ৯৪টি স্বর্ণপদক, ৬১ জনকে পিএইচডি এবং ৪৩ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেওয়া হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ।

সমাবর্তনকে ঘিরে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, এ আয়োজনের সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। সমাবর্তন সফল করতে গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, সমাবর্তন দিবস শিক্ষার্থীদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিনটির জন্য শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তারা একাডেমিক সার্টিফিকেট ও পদক গ্রহণ করেন।

স্বাধীনতাপূর্ব ও উত্তরকালে দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বন্ধ ছিল। বর্তমানে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এই সংস্কৃতি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা তার।

শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক পরিষদের সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, এফিলিয়েটেড কলেজের অধ্যক্ষ ও ইনস্টিটিউটসমূহের পরিচালকেরা শোভাযাত্রা সহকারে সমাবর্তন স্থলে উপস্থিত হবেন এবং মহড়ায় অংশ নেবেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়। সমাবর্তনে অংশগ্রহণেচ্ছু গ্র্যাজুয়েট ও পদকপ্রাপ্তরা উদ্দীপনার সঙ্গে সকাল থেকেই তাদের আমন্ত্রণপত্র ও একাডেমিক কস্টিউম সংগ্রহ করছেন।

কস্টিউম সংগ্রহ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রাণের সতীর্থদের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্যে চলছে ছবি তোলার মহড়া। ক্যাম্পাসজুড়ে ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক শব্দ।

সমাবর্তনে অংশ নিতে পারায় গর্বিত মনে করেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম। অপরাজেয় বাংলায় বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ ছবি তুলছিলেন তিনি। মঞ্জুরুল রাইজিংবিডিকে বলেন, এবার সমাবর্তনে প্রায় ১৮ হাজার গ্র্যাজুয়েট অংশ নিচ্ছি। দিনটিতে একসঙ্গে সবার দেখা হবে। আবার কবে আমরা মিলিত হতে পারব সেটা বলতে পারছি না। হয়ত তাদের দুই এক জনের সাথে দেখা হতে পারে কিন্তু সবার সঙ্গে এভাবে আর দেখা হবে না। তাই দিনটিকে স্মৃতিময় করে রাখতে গত কয়েকদিন ধরেই বন্ধুদের সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলো ফ্রেমে বন্দি করে রাখছি।

দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থী হতে পেরে গর্বিত মনে করছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা ইসলাম তন্নি। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচটি বছর ক্যাম্পাসে যখন বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতাম তখন কিছুই মনে হতো না। কিন্তু আজ যখন মনে হচ্ছে এই ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নেব তখন মনটা খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসের সেই দিনগুলি খুব মনে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে দেশের জন্য অবদান রাখতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছে তা আমরা দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণে সচেষ্ট থাকব।

১৯২১ সলের ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর সর্বপ্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছিল ১৯২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। এর পর ১৯২৪ সাল থেকে ১৯৪৬ সাল প্রতি বছরই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তান আমলে ঢাবির প্রথম সমাবর্তন হয়েছিল ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ। এর পর ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ১৫ বার সমাবর্তন হয়। স্বাধীনাতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রথম (৪০তম) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে যায় ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডি। তারপর ৪০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে। ২০০১ সাল থেকেই আবার নিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৪ মার্চ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মার্চ ২০১৭/ইয়ামিন/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়