ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কুমিল্লা জিলা স্কুলকে ঘিরে উৎসব আমেজ

বিল্লাল হোসেন রাজু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০০, ১৮ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কুমিল্লা জিলা স্কুলকে ঘিরে উৎসব আমেজ

কুমিল্লা সংবাদদাতা : আর একদিন পরই ২০ জুলাই গৌরবের ১৮০ বছর উদযাপন করবে কুমিল্লা জিলা স্কুল। এ উপলক্ষে সাজসজ্জার কাজ চলছে সুপ্রাচীন বিদ্যালয়টির প্রাঙ্গণে।

বিদ্যালয় এলাকায় লাইটিং, নান্দনিক তোরণ নির্মাণ আর সুসজ্জিতকরণের নানা আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা । বর্তমান আর প্রাক্তন ছাত্ররাসহ জিলা স্কুল পরিবারের সদস্যদের মিলনে বিদ্যালয়ে মনোজ্ঞ পরিবেশের সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র নাহিদুল জানান, জিলা স্কুলে পড়তে পারাটা তার জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের। স্কুলের ১৮০ বছর পূর্তির আয়োজনে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পেরে তার গর্ববোধ হচ্ছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার বলেন, ‘পাঁচ বছর পর আবারো এত বড় আয়োজন হচ্ছে। আমার ছাত্রদের আনন্দই আমার আনন্দ। এ আনন্দ স্কুলের সবার।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল খায়ের মুন্সী বলেন, ‘বিদ্যালয়টির সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। বিদ্যালয়ের পড়াশোনা, ফলাফল ও অবকাঠামোগত দিকগুলোও চমৎকার। ভবিষ্যতেও বিদ্যালয়টি সুনাম বয়ে আনুক, এটাই কামনা করছি।’

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০ জুলাই সকাল ৮টায় স্কুল আঙিনায় শেষ পর্যায়ের রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে। সকাল ১১টায় র‌্যালি, দুপুর ১২টায় আলোচনা সভা, দুপুর ২টায় মধ্যাহ্নভোজ, বেলা তিনটায় সমাপনীর পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । এ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে ওইদিন কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে গান পরিবেশন করার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব উদ্যোগে আলাদা আলাদা ব্যানার হবে।

উল্লেখ্য, ১৮৩৭ সালের ২০ জুলাই কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অফিসের প্রধান করণিক মি. হেনরি জর্জ লাইচেস্টার বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এটি কুমিল্লা গভর্নমেন্ট স্কুল নামে পরিচিত ছিল। ১৮৩৯ সালের মে মাসে তিনি এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৮৭০ সাল মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে ৫ জন ইউরোপিয়ান, ১ জন হিন্দু ও ৩ জন মুসলমান বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তির সমন্বিত কমিটির ওপর এর পরিচালনার ভার ন্যস্ত ছিল। ধর্মসাগর দিঘির পাড়ে একটি বাংলোতে প্রথম ক্লাস শুরু হয়।

স্কুলটিতে বর্তমানে চারটি হাউজ রয়েছে। এগুলো হলো আবু জাহিদ হাউজ, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হাউজ, কাজী নজরুল ইসলাম হাউজ ও মোতাহের হোসেন হাউজ। প্রত্যেক বছর হাউজগুলোর মধ্যে খেলাধুলা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক আসরের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিএনসিসি (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর), স্কাউটিং, খেলাধুলা), বিতর্ক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার্ষিক সাময়িকী, গণিত ও ভাষা প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা ও শিক্ষাসফর ইত্যাদি।  বর্তমানে স্কুলটি দুটি শিফটে বিভক্ত। এছাড়া ৫ম শ্রেণি থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত কয়েকটি শাখায় বিভক্ত করে চালানো হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম । বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২০৫৬জন শিক্ষার্থী ও ৫৩ জন শিক্ষক রয়েছে।

কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সচিব, মন্ত্রী ও বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন এ বিদ্যালয় থেকে। এ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শেষ করেছেন সংগীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মন, সংগীত শিল্পী হিমাংশু দত্ত, শিল্পী ও স্বরলিপিকার সুধীন দাশ, শিল্পী আপেল মাহমুদ, সুরকার ও গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, কেবিনেট সচিব আজিজুল হক, জাতীয় পতাকার রূপকার শিব নারায়ণ দাশসহ অসংখ্য গুণী ব্যক্তিত্ব।



রাইজিংবিডি/কুমিল্লা/১৮ জুলাই ২০১৭/বিল্লাল হোসেন রাজু/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়