ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

লাখ লাখ টাকায় প্রক্সি পরীক্ষা, অবশেষে ধরা

তহিদুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৮, ১২ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লাখ লাখ টাকায় প্রক্সি পরীক্ষা, অবশেষে ধরা

জাবি সংবাদদাতা : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে চান্স পাওয়া চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রের হাতের লেখার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় লেখার মিল না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের আটক করে। তারা হলেন- মাহবুব হোসেন, ইমাম হোসেন, অমিত হাসান, আশিকুল হাসা রবিন।

রোববার বিভিন্ন অনুষদের সাক্ষাৎকার চলাকালে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ নয়ন।

ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রে বাংলা ও ইংরেজিতে দুটি বাক্য লিখতে দেওয়া হয়। উত্তীর্ণ  পরীক্ষার্থীদের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার জন্য সাক্ষাৎকারে ওই দুটি বাক্য লিখতে দেওয়া হয়। চার শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের হাতের লেখার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের লেখার মিল না পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট সাক্ষাৎকার বোর্ডের সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনজন জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন এবং অন্যজন অস্বীকার করেন।

প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, মাহবুব হোসেন, ইমাম হোসেন, অমিত হাসান, আশিকুল হাসা রবিন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে চুক্তি করেন। এতে পরীক্ষাকেন্দ্রে এদের পরীক্ষা দিয়ে দেয় অন্য কেউ। এভাবে জালিয়াতি করে লিখিত পরীক্ষা উতরায় তারা। এদের মধ্যে মাহবুব হোসেন ভর্তি জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী মাহবুবের পরিবর্তে অন্য একজন পরীক্ষা দিয়ে দেয়। এতে তিনি ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) তৃতীয় স্থান লাভ করেন। তিনি বগুড়ার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। 

ময়মনসিংহের সদর থানার হাফেজ আব্দুল মান্নানের ছেলে ইমাম হোসেন ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে রাহাত হোসেনের সঙ্গে চুক্তি করেন। এতে তার পরীক্ষা রাহাত দিয়ে দিলে তিনি ‘এফ’ ইউনিটে (আইন ও বিচার অনুষদ) তৃতীয় স্থান লাভ করেন। তিনি ময়মনসিংহের একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। 

ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হারেছ মিয়ার ছেলে অমিত হাসানের পরীক্ষা দিয়ে দেন সনেট। এতে অমিত ‘এইচ’ (আইআইটি) ইউনিটে ১১তম স্থান লাভ করেন।

অন্যজন কুষ্টিয়ার সদর থানার আবুল কালাম আজাদের ছেলে আশিকুল হাসা রবিন। তিনি ‘এফ’ (আইন ও বিচার অনুষদ) ইউনিটে ১৬তম স্থান লাভ করেন। তার হাতের লেখার সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রের লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়।

তিনজন জালিয়াতির কথা উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার করলেও অস্বীকার করেছেন রবিন।

রবিন বলেন, ‘আমি কোনো জালিয়াতি করিনি। আমাকে এখন পরীক্ষা দিতে দিলে আমি পরীক্ষা দেব। আমি নার্ভাস থাকার কারণে ঠিক মতো লিখতে পারিনি।’

প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘রবিনের লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে সেও অপরাধী। তাই তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ বাকি ব্যবস্থা নেবে। বাকি তিনজন মুচলেকায় ভর্তি জালিয়াতির কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’



রাইজিংবিডি/সাভার/১২ নভেম্বর ২০১৭/তহিদুল ইসলাম/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়