ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘কি বলতে চাইছে জল্লাদখানা বধ্যভূমি’

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কি বলতে চাইছে জল্লাদখানা বধ্যভূমি’

সাইফুল আহমেদ : ঢাকার মিরপুরেই শৈশব, কৈশোর কাটিয়ে তারুণ্যে পদার্পণ। বাবা-মায়ের কাছ থেকে এখানকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বহু শুনেছি। এখানকার বধ্যভূমিগুলোর কথা, সেখানে মুক্তিযুদ্ধকালীন নিষ্ঠুরতা, নির্মমতার কথা। বিশেষ করে জল্লাদখানা বধ্যভূমি বা পাম্পহাউজ বধ্যভূমির কথা। তবে নানা কারণে ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’ এই বধ্যভূমিটি। রোববার চিন্তা করলাম, আর দেরি নয়। পাপে থাকার চেয়ে প্রায়শ্চিত্তে পাপমোচনও উত্তম।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলার মুক্তিকামী মানুষের ওপর নির্মম, ঘৃণ্য নির্যাতন চালিয়েছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও বিহারিরা। তারা মুক্তিকামী স্বাধীনতাপিয়াসি বাংলার মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে নিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত জল্লাদখানায় তাদের ট্রেনিংপ্রাপ্ত জল্লাদ দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে জবাই করত, যেসব জল্লাদখানা বর্তমানে বধ্যভূমি নামে পরিচিত।



এমনই একটি বধ্যভূমি হলো ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বরে অবস্থিত জল্লাদখানা বধ্যভূমি বা পাম্পহাউজ বধ্যভূমি। এটি বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত কুখ্যাত বধ্যভূমি। এটি মূলত ছিল ওয়াসার একটি পরিত্যক্ত পাম্পহাউস। স্থপতি ও কবি রবিউল হুসাইনের সার্বিক পরিকল্পনায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রচেষ্টায় তৈরি করা হয় জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ। এখানে পাম্প হাউজের কূপের সামনে একাত্তরের ঘৃণ্য পাক হানাদার বাহিনী এবং আলবদর রাজাকাররা বহু নিরপরাধ বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে এনে শিরশ্ছেদ ও হত্যা করে পানিভর্তি কূপে ফেলে দিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বধ্যভূমিটি মূলত মানবতাবিরোধী অপরাধে ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে ফাঁসিতে ঝোলানো জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মিরপুরের বিহারি অধ্যুষিত এলাকাগুলো সাধারণত বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মিরপুর বাংলা কলেজ, কালাপানি, শিরনিরটেক ও কাউয়িন্দা, গোলারটেক, আলোকদি, শিয়ালবাড়ি, সারেংবাড়ি, ধলপুর ডিপো প্রভৃতি। তবে মিরপুরের জল্লাদখানায় নির্যাতনের মাত্রা সেগুলোকে বহুগুণ ছাড়িয়ে গেছে। স্বাধীনতার পর এই বধ্যভূমি ও তার চারপাশের নিচু জমি থেকে প্রায় তিন ট্রাক মানুষের দেহাবশেষ উদ্ধার করে তা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন সরকার দেশের বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিতকরণ ও সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের সহযোগিতায় মিরপুরের দুটি জায়গায় খননকাজ চালায় মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর এবং এই বধ্যভূমিটি আবিষ্কার করে।



এখান থেকে ৭০টি মাথার খুলি, ৫৩৯২টি অস্থিখণ্ড, মেয়েদের শাড়ি, ফ্রক, ওড়না, অলংকার, জুতা, তসবিসহ শহীদদের ব্যবহার্য নানা জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে কাদের মোল্লার হাত ছিল বলে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়েছে। আর কাদের মোল্লাকে যেকয়টি অভিযোগে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে মিরপুরে জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে গণহত্যা অন্যতম।



জল্লাদখানা বধ্যভূমি থেকে জানা গেল, একাত্তরের ২৯ মার্চ বিকেলে আরামবাগ থেকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের বাসস্ট্যান্ডে গেলে কাদের মোল্লা ও তার সহযোগীরা তাকে ধরে নিয়ে এখানে এনে হত্যা করেন। এ ছাড়াও মিরপুরের আলোকদি গ্রামের পূর্ব দিকে হেলিকপ্টার থেকে পাকিস্তানি সেনারা নামলে গণহত্যায় তাদের সহযোগিতা করেন। ট্রাইব্যুনালে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, কাদের মোল্লা অর্ধশতাধিক অবাঙালি ও রাজাকার নিয়ে গ্রামের পশ্চিম দিক থেকে ঢোকেন এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি মারা যায়।



বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠে প্রবেশ করে বামপাশ ধরে এগিয়ে গেলে একে একে চোখে পড়ে কিশোরগঞ্জের বড়ইতলা বধ্যভূমি, রাজশাহীর বাবলা বন বধ্যভূমি, জয়পুরহাটের পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি, চট্টগ্রামের ফয়স লেক বধ্যভূমি, খুলনার চুকনগর বধ্যভূমি, সিলেটের আদিত্যপুর বধ্যভূমির মাটি সংরক্ষিত রয়েছে কাঁচ দিয়ে ঘেরা মাটিরপাত্রে। এই ছয়টি বধ্যভূমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি ছিল।



বধ্যভূমির উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের চারপাশের বেদিতে মর্মরপাথরে খোদাই করা হয়েছে বিভাগওয়ারি বাংলাদেশের বিভিন্ন বধ্যভূমির নাম। জল্লাদখানা বধ্যভূমির দেওয়া তথ্যানুসারে, সারা বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৪৬৬টি বধ্যভূমি চিহ্নিত করা গেছে।



বধ্যভূমির পশ্চিম পাশে রয়েছে শিল্পী রফিকুন নবী ও মুনিরুজ্জামানের তৈরি ভাস্কর্য ‘জীবন অবিনশ্বর’। ছয়টি ক্ষতবিক্ষত লাশের ওপর উদীয়মান সূর্য দেখানো হয়েছে এতে, যা মৃত্যু ও ভীতির অমানিশা থেকে নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের প্রতীক। এ ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ দিকের বেদিতে মর্মরপাথরে খোদাই করা বিভাগওয়ারি বাংলাদেশের বিভিন্ন বধ্যভূমির নামের ঠিক ওপরের দেয়ালে রয়েছে টেরাকোটা ইট দিয়ে তৈরি মানুষের বিচ্ছিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, যা একাত্তরে এই বধ্যভূমি সংঘটিত নৃশংসতাকে ফুটিয়ে তুলেছে।



জল্লাদখানা স্মৃতিপীঠের পূর্বদিকে রয়েছে 'স্মৃতি টাওয়ার'। এটির নির্মাতাও স্থপতি রবিউল হুসাইন। এ ছাড়া রয়েছে ছোট্ট একটি ঘর। এটিই সংগ্রহশালা। যার প্রবেশমুখে ঝুলছে একটি ঘণ্টা। এর নাম 'সেন্টিমেন্ট বেল'। দর্শনার্থীকে এ ঘণ্টা বাজিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। এ শব্দ শহীদদের কাছে নিজের আগমনের বার্তা জানান দেয়। ঘণ্টা বাজিয়ে শহীদদের স্মরণ করা হয়, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত করা হয়। প্রকাশ পায় সত্য ও ন্যায়ের বাণী, কম্পিত হয়ে অসাড় চেতনাবোধ।



সংগ্রহশাহার প্রবেশদ্বারের ওপরের অংশ ছয়টি ভাষায় লেখা- ‘কী ঘটেছিল এখানে?’ মূলত বধ্যভূমির এই জায়গাটাতেই মুক্তিকামী স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতিয়তাবাদ চেতনায় উদ্বুদ্ধদের ধরে এনে জবাই করা হতো। জুতা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেয়ালে দেখা মেলে মিরপুরে শহীদদের নামের একটি তালিকা। ইতিমধ্যেই সেখানে সন্নিবেশিত হয়েছে ৩৯টি নাম। এদের মধ্যে রয়েছেন খন্দকার আবু তালেব, আবদুল হাকিম, আবদুর রহমান, হাজী আবদুর রহমান, রমিজ উদ্দিন, বরকত আলী মোল্লা, শহীদউল্যা মোল্লা, আ. আজিজ মোল্লা, ডা. জয়েন উদ্দিন আলী দেওয়ানসহ আরো অনেকে। আরও নতুন নতুন নাম যুক্ত হচ্ছে। এর পর দেখা মেলে সেই কুয়ার। হত্যার পর যেখানে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল শহীদদের। এর সামনে একটি কাচের সেলফের ভেতরে রয়েছে এখানকার বধ্যভূমির মাটি। আর তিনটি বক্সে রাখা হয়েছে মেয়েদের শাড়ি, ফ্রক, ওড়না, অলংকার, জুতা, তসবিসহ শহীদদের ব্যবহার্য নানা জিনিসপত্র।



সংগ্রহশালার বাম পাশে আরেকটি কূপ রয়েছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা, বাঙালি, মুক্তিকামী আর হিন্দুদের জবাই করে মেরে মাথাটা ফেলা হতো কুয়াতে, আর শরীর পাশের নালাতে। সংগ্রহশালার ডান পাশে চোখে পড়বে একটা খোলামেলা ঘর। ঘরের মাঝখানে দুটো সিমেন্টের বেঞ্চ ও একটা টেবিল, চারকোণে চারটা টেবিল। কর্নার টেবিলগুলোতে চারটি ফাইলে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাঙালি হত্যার কালো ইতিহাস। মূল টেবিলে মন্তব্য খাতা।

জল্লাদখানা স্মৃতিপীঠটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। বর্তমানে এর রক্ষণাবেক্ষক হিসেবে আছেন প্রমিলা বিশ্বাস, যিনি ‘বধ্যভূমি শহীদ পরিবারের সন্তান দল’ নামের একটি সংগঠনের গানের প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, ‘বধ্যভূমি শহীদ পরিবারের সন্তান দল’ হলো এই বধ্যভূমিতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সন্তানদের একটি সংগঠন। এরা বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে থাকেন।



তিনি আরো জানান, নবপ্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে প্রতি শনিবার এই স্মৃতিপীঠের পাঁচ কোণাকৃতি উন্মুক্ত স্থানে শিশু-কিশোরদের নিয়ে অনুষ্ঠান হয়, যার নাম হলো ‘স্মৃতিচারণ’। এই অনুষ্ঠানে বধ্যভূমিতে শহীদদের কাহিনী শোনানো হয় শিশু-কিশোরদের, যেন তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শহীদদের প্রতি ভালোবাসা সুদৃঢ় হয়।

মিরপুরের এই অঞ্চলটি এখনো বিহারি ও অবাঙালি অধ্যুষিত এলাকা। এ বিষয়ে প্রমিলা বিশ্বাস বলেন, ‘স্মৃতিপীঠের আসা দর্শনার্থীরা প্রায়ই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে আমাদের আপনজনদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে, তারা ও তাদের বংশধররা এখনো এখানে বুক ফুলিয়ে বসবাস করছে, এটি খুবই দুঃখজনক। সরকারের উচিত এদেরকে অন্তত মিরপুর থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া।’

প্রমিলা জানান, এই স্মৃতিপীঠটি সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। কোনো সাপ্তাহিক বন্ধের দিন নেই। প্রবেশের জন্য কোনো টিকিট নেই এবং এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।



বধ্যভূমির উত্তর পাশের দেয়ালে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘটিত গণহত্যায় নিহত মানুষের সংখ্যা লেখা আছে। আর্মেনিয়ায় ১৫ লাখ, নাৎসি জার্মানির হাতে ১ কোটি ১০ লাখ, ইন্দোনেশিয়াতে ১২ লাখ, ভিয়েতনামে ৩০ লাখ, বাংলাদেশে ৩০ লাখ, কম্বোডিয়ায় ১৭ লাখ, যুগোশ্লাভিয়ায় ২ লাখ ২৫ হাজার, রুয়ান্ডায় ১০ লাখ, আফগানিস্তানে ২০ লাখ, গুয়েতেমালায় ২ লাখ, পূর্ব তিমুরে ২ লাখ, সুদানে ২০ লাখ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছে। তার ঠিক নিচে লেখা ইংরেজিতে Contd অর্থাৎ Continued ও বাংলায় চলছে। অর্থাৎ গণহত্যা থেমে নেই। সারা বিশ্বে এখনো গণহত্যা চলছে- সিরিয়া, ইয়েমেন কিংবা ফিলিস্তিনে।

হ্যাঁ, গণহত্যা চলছে। কিন্তু গণহত্যায় অংশ নেওয়া সব নরপশুকে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। যেমন হয়নি এদেশেও। বাংলাদেশের রক্তভেজা মাটিতে আজও মুক্তিযোদ্ধা-মুক্তিকামী বধে অংশ নেওয়া বহু পাষণ্ড সদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সময়ের ব্যবধানে তাদের মুখোশ বদলেছে শুধু। তা ছাড়া, আজও বাংলাদেশের পুরোনো কিংবা নতুন প্রজন্মের অনেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ের শহীদদের আত্মদানকে অস্বীকৃতি করতে চান, তাদের স্বাধীনতার সিদ্ধান্ত, ভালোবাসাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান। একটি দ্বিধাবিভক্ত চেতনায় সাওয়ার হন।



জল্লাদখানা বধ্যভূমির সামনে যেতেই প্রবেশদ্বারের দুই পাশে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সৌজন্যে দুটি সাইনবোর্ড দৃশ্যমান। যার ডান পাশেরটিতে লেখা- ‘একাত্তরের গণহত্যা ও শহীদদের কথা বলবে শতকণ্ঠে জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ’। আর বাম পাশেরটিতে লেখা আছে- ‘কান পেতে শুনি কি বলতে চাইছে জল্লাদখানা বধ্যভূমি’।

আসলেই তো! কী বলতে চাইছে এই জল্লাদখানা বধ্যভূমি? শুধুই কি একাত্তরের গণহত্যা ও শহীদদের কথা বলতে চাইছে নাকি তার চেয়েও বেশি কিছু? কান পেতে যেন এক অস্পষ্ট চাপা কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। যেন কিছু মানুষ ধুকরে কাঁদছে, কিছু লোক অর্ধশিরচ্ছেদকৃত রক্তভেজা শরীরে ছটফট করছেন। হয়ত আর কিছুক্ষণ পর নিথর হয়ে যাবে তার দেহ। তবে শেষনিঃশ্বাসের আগে বলতে চাইছে- ‘প্রিয় দেশবাসী, আর যাই হোক আমাদের চেতনাকে তোমরা প্রশ্নবিদ্ধ করো না। আমরা তোমাদের জন্যই জীবন দিয়েছি।’ বধ্যভূমির রক্ত ও কান্নাভেজা বাতাসে যেন এই কথাই বারবার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে! হয়ত এই কথাই বলতে চাইছে জল্লাদখানা বধ্যভূমি!



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ডিসেম্বর ২০১৭/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়