ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘কোথাও বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় নেই’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ৭ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘কোথাও বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় নেই’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন,  ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে অবস্থা বিদ্যমান আছে সেটাই বিচার বিভাগের জন্য শ্রেয়। পৃথিবীর কোথাও কোনো গণতান্ত্রিক দেশে, কোনো অগণতান্ত্রিক দেশে বা ১৯৩টি দেশের মধ্যে কোথাও বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় নেই। তাই এ মুহূর্তে এটা ভাবা অবাস্তব।’

রোববার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য ২১তম জুডিসিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে ১১৬ অনুচ্ছেদে যে অবস্থা বিদ্যমান ছিল বিচার বিভাগের জন্য সেটাই শ্রেয়। আলাদা বিচার বিভাগের সচিবালয়ের কথা বলা হচ্ছে, আসলে পৃথিবীর কোথাও সেটা নেই। তবে হ্যাঁ, ভবিষ্যতে হবে কি হবে না সেটা বলা যাবে না।

‘বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয়ের কথা যেটা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আমি দুটো কথা বলতে চাই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবাবে হত্যা করার পরে এবং ৩রা নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পরে বাংলাদেশে একটা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। সেটা কিন্তু ২১ বছর বিদ্যমান ছিল। বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এই হত্যার ব্যাপারে ২১ বছরে কিন্তু কোনো মামলা হয় নাই। তখন কিন্তু কেউ সুয়োমোটো রুল করে নাই’, বলেন আনিসুল হক।

ষোড়শ সংশোধনী রিভিউয়ের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, রিভিউ করার অধিকার সংবিধান কিন্তু প্রত্যেককেই দিয়েছে। সেখানে সরকারকে কিন্তু বাদ দেয়নি। সেই অধিকার নিয়ে রিভিউ করা হয়েছে। এখন আপিল বিভাগ যখন মনে করবেন এটার শুনানি করবেন। তারা তারিখ দিলেই শুনানি হবে।

সরকারও এই বিতর্কের অবসান তথা এই মামলা নিরসন চায় বলে জানান আইনমন্ত্রী।

বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলাবিধি করার ব্যাপারে সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে ঠিক সেভাবেই অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার করেই এই শৃঙ্খলাবিধি করা হয়েছে। বিধিটি যখন আপিল বিভাগ গ্রহণ করেছেন, তখন তারা কিন্তু এ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি তার আদালতের যে মতামত তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।

মামলার জট কমিয়ে আনতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের আদালতগুলোতে প্রায় ৩০ লাখ মামলা বিচারাধীন আছে। এ মামলার জট কমিয়ে আনা বিচার বিভাগ ও সরকারের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেওয়ানি কার্যবিধি এবং অর্থ ঋণ আদালত আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির বিধান অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির সহায়ক আইন করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিচার বিভাগের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এবং শত বছরের পুরনো আইন ও বিধিগুলো সংস্কার করে বিচার ব্যবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মামলা জট কমিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে বিচারকদেরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।

ন্যায়বিচারের দ্বার যেন সর্বস্তরের বিচারপ্রার্থীদের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং কেবল বিত্তবানদের জন্য যেন সীমাবদ্ধ না থাকে, সে বিষয়ে তিনি বিচারকদের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান। 

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বক্তব্য রাখেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জানুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়