ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রাবির উপ-রেজিস্ট্রারের এ কেমন কাণ্ড!

মেহেদী হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাবির উপ-রেজিস্ট্রারের এ কেমন কাণ্ড!

রাবি সংবাদদাতা : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-রেজিস্ট্রার ফোন করে ভুল তারিখ জানানোর কারণে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে ভর্তি হতে পারেনি এক শিক্ষার্থী। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার শিক্ষাজীবন।

৬ষ্ঠ মেধা তালিকায় নির্বাচিত হওয়া এই শিক্ষার্থীর নাম সজীব চন্দ্র বর্মণ। শিক্ষার্থী জানান, ৬ষ্ঠ মেধা তালিকা প্রকাশের দিন সকাল ১১টার দিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তার টেলিফোন (৭১১১৩০) নম্বর থেকে উপ রেজিস্ট্রার মোফাজ্জল হোসেন তাকে কল করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তির শেষ তারিখ ২৪ জানুয়ারি হলেও উপ-রেজিস্ট্রার তাকে ২৫ তারিখে আসার কথা জানান। পরে সে ২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে তাকে আর ভর্তি হতে দেওয়া হয়নি।

দেখা যায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অপেক্ষমান ৬ষ্ঠ মেধা তালিকা গত ২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। সেখানেই সজীবের নাম রয়েছে। নোটিশ মোতাবেক তার ভর্তি শেষ সময় ছিল ২৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টা। ২৩ তারিখে ৬ষ্ঠ মেধা তালিকা প্রকাশের একদিন পরেই (২৪ জানুয়ারি) ৭ম মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে নওরিন রহমান নিশি নামের এক শিক্ষার্থীকে ২৫ তারিখে ভর্তির জন্য নির্বাচিত করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সজীব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘উপ-রেজিস্ট্রার স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি ২৫ তারিখে ভর্তি হতে আসি। কিন্তু এসে দেখি ভর্তির শেষ তারিখ ২৪ জানুয়ারিই ছিল। ফলে আমাকে ভর্তি করানো হয়নি। ফোনে কথা বলার সময় উপ-রেজিস্ট্রার আমাকে বারবার জিজ্ঞেসা করেন, আমি অন্য কোথাও ভর্তি আছি কি না। এখন মনে হচ্ছে, তিনি আমার আসনে অন্য কাউকে ভর্তি করাতে চেয়েছেন, তাই আমাকে ভুল তারিখ বলেছেন। আমাকে যদি ভুল তারিখ না বলা হতো, তবে বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তারিখ অনুযায়ী আমি ভর্তি হতে আসতাম।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-রেজিস্ট্রার মোফাজ্জল হোসেন জানান, ‘২৫ তারিখ কেন বলা হয়েছিল এই মুহূর্তে তো আমার মাথায় সেটা সেট করা নেই।’

তবে মোফাজ্জলকে সজীবের সঙ্গে কথপোকথনের রেকর্ড শোনানো হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এখানে (রেকর্ডিংয়ে) আমার কণ্ঠ ঠিকই আছে। সে ওয়েবসাইটে দেখে নাই, তার দায়িত্ব পালন করে নাই, এখন এ ব্যাপারে কিছু বলার থাকলে ডীনকে বলেন। ডীন যা বলার তা বলবেন।’

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়াতে ৩য় অপেক্ষামান তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়। শূন্য আসন অনুযায়ী অপেক্ষমান তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ভর্তি হতে ইচ্ছুক তাদেরকেই পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত মেধা তালিকায় রাখা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি তালিকাও অনুষদ দফতরে রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী, যাদেরকে ফোন করা হয়েছিল তাদের মধ্যে অনেকেই ফোন রিসিভ করেনি। তবে যারা ফোন রিসিভ করেনি তাদেরকে ছাড়াই মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বলে অনুষদ দফতর থেকে জানানো হয়েছে।

সামাজিক অনুষদের ডীন অধ্যাপক ফয়জার রহমান জানান, ‘আামি ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি শুনেছি। ইতোমধ্যে উপ-রেজিস্ট্রারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি যে ভুল করেছেন সেটা সত্যি। তবে ওই শিক্ষার্থী ঘটনা আমাকে না জানিয়েই উপ-উপাচার্য মহোদয়কে জানিয়েছেন। এখন উনারা হয়তো বিষয়টি তাদের মতো করে দেখবেন।’

ওই শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি কিছুই বলতে পারছি না।’

রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘যে শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমনটি হয়েছে, সে যদি বিষয়টি উল্লেখ করে ডীনের কাছে আবেদন করে, তবে তার ভর্তির বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’



রাইজিংবিডি/রাবি/২৭ জানুয়ারি ২০১৮/মেহেদী হাসান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়