‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়’
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল, নির্বাচনী কার্যক্রমে বাধা এবং নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়াপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার এমনকি বিচার বিভাগ, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য এক জোট হয়েছে। এটা আমাদের কাছে শুধু বিস্ময়কর নয়, আতঙ্কের। এই কথা আমরা অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে বলছি।’
‘আমরা আশা করেছিলাম, তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী দল তাদের প্রার্থীদের নিয়ে প্রচারণায় নামতে পারবে, নির্বিঘ্নে প্রচার চালাতে পারবে, মামলা আপাতত স্থগিত থাকবে। কিন্তু তা হয়নি। দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে সেই অবস্থায় দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি জায়গায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। এমনকি আমরা কাকে দলীয় মনোনয়ন দেব সেটিও হাইকোর্ট থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। তাহলে কীভাবে বলব হাইকোর্ট থেকে ন্যায়বিচার পাচ্ছি?’
তিনি বলেন, ‘যদি একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এভাবে বাতিল করে দেওয়া হয় তাহলে কি মানুষ মনে করবে না যে, এখন বিচার বিভাগও সরকারের ইচ্ছায় কাজ করছে?’
‘এভাবে বিচার বিভাগের ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে। আমাদের ১৫ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার আবারো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করতে চাচ্ছে।’
উচ্চ আদালত বেআইনিভাবে বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করতে চাই বলেই নির্বাচনে এসেছি। উচ্চ আদালতের কাছে আবেদন করছি, দয়া করে আপনারা ন্যায়বিচার করুন। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদেরকে বেআইনিভাবে বাতিল করাটা সঠিক হবে না।’
নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইসিকে আবারো বলতে চাই আপনাদের দায়িত্বটা পালন করুন। রাষ্ট্র, সংবিধান আপনাদেরকে যে অধিকার দিয়েছে তা প্রয়োগ করুন।’
প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২৪ তারিখে সেনাবাহিনী মোতায়েন হবে। বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে, প্রশাসনের সকলের কাছে আমাদের আহ্বান এই দেশ আমাদের সকলের, জনগণ এই দেশের মালিক। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র ও জনগণ যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করুন। আপনারা কোনো দলের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন।’
‘বিএনপির অর্থ নিন, নৌকায় ভোট দিন’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের টাকা কোথায়? জায়গা-জমি, বাড়ি-ঘর বিক্রি করার অবস্থা হয়ে গেছে। আর প্রধানমন্ত্রী এই কথা কীভাবে বলতে পারেন? সম্পূর্ণ অনৈতিক। “টাকা নিন ভোট দিন” এর চাইতে অনৈতিক কথা আর কি হতে পারে? অনৈতিক পরামর্শ দেওয়া অপরাধ। আমি দাবি করব, নির্বাচন কমিশন এগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ূম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ ডিসেম্বর ২০১৮/রেজা/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন