ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আইটেম গার্ল মিথিলার আত্মহত্যার নেপথ্যে

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আইটেম গার্ল মিথিলার আত্মহত্যার নেপথ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : ঢাকার মিডিয়া জগতে আলোচিত-সমালোচিত মডেল, ঢাকাই ছবির আইটেম গার্ল জ্যাকলিন মিথিলা চট্টগ্রামে বাবার বাসায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কেন এই আত্মহত্যা, কী তার নেপথ্য কাহিনি?

নেপথ্য কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিংয়ের নিজ বাসায় আত্মহত্যা করলেও ঘটনাটি জানাজানি হয়েছে মঙ্গলবার। পারিবারিকভাবেও বিষয়টি এত দিন গোপন রাখা হয়েছিল। প্রশাসনকে না জানিয়ে লাশও দাহ করে ফেলা হয়। তবে গত শুক্রবার বিকেলে মিথিলার বাবা স্বপন শীল নগরীর বন্দর থানায় এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, আত্মহত্যার আগে জ্যাকলিন মিথিলা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তার এক বন্ধু জানান, মিথিলা এর আগেও অনেকবার ফেসবুকে আত্মহত্যার কথা জানিয়েছিল। তাই তার আত্মহত্যা করার বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। এবার সত্যি সত্যি আত্মহত্যা করলেও সেই খবরটি কারো কাছে ছিল না।

চট্টগ্রাম বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম জানান, মিথিলা আত্মহত্যা করেছেন বলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার পিতা। এই আত্মহত্যার কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া। ডায়েরিতে মিথিলার প্রকৃত নাম দেওয়া হয়েছে জয়া শীল, বয়স ২২ বছর।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, মিথিলা বিবাহিত ছিলেন। তার স্বামীর নাম উৎপল রায়। স্বামীর বাড়ি ফটিকছড়ির ধুরং ইউনিয়নে। স্বামীর সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া লাগত। এই কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ডায়েরিতে তার পিতা উল্লেখ করেছেন। আত্মহত্যার পর ময়নাতদন্ত শেষে তাকে চিতায় পোড়ানো হয়েছে বলে জেনেছি। মিথিলার বাবা স্বপন শীলও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মিথিলা মারা গেছে। গলায় দড়ি দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে সে ঘুমের বড়ি খেয়েছিল।

 


মিথিলার বাবা বলেন, ‘১০-১২ দিন আগে আমার মেয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে বাসায় আসে। বাসায় এসে সে আমাকে ফটিকছড়ির ধুরং গ্রামের উৎপল রায় নামের এক তরুণের সঙ্গে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে বলে জানায়। সে আরো জানায়, উৎপলের পরিবার তার বিয়ের বিষয়টি মেনে নেয়নি এবং তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন তাকে নানাভাবে ফোন করে হুমকি দিচ্ছে, অপমান করছে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার সকালের দিকে আমার বাসায় সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করে সে। সুইসাইড নোটে মিথিলা তার স্বামী ও স্বামীর আত্মীয়স্বজনদের নিয়মিত অপমানের কথা লিখে গেছে এবং এ কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বলে উল্লেখ করে।’

 

খোলামেলা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে এবং নিজেকে বাংলার সানি লিওন দাবি করা এ মডেলের ফেসবুক ওয়ালে ঢুকে আত্মহত্যা সম্পর্কিত দুটি স্ট্যাটাস পাওয়া যায়। একটি ৩০ জানুয়ারি রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে দেওয়া। এতে তিনি লিখেন, ‘কালকে আমি আত্মহত্যা করব। কেউ আমাকে প্রত্যাখ্যান করে নাই। আমিও কাউকে প্রত্যাখ্যান করি নাই। কিন্তু আমি আত্মহত্যা করব।’ আবার ৩১ জানুয়ারি সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে লিখেন, ‘ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে পা বাড়াচ্ছি।‘
.

 

 

রাইজিংবিডি/ চট্টগ্রাম/৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/রেজাউল করিম/টিপু/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়