ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘একুশ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে মাথা উঁচু করে চলার’

তানজিনা আফরিন ইভা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘একুশ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে মাথা উঁচু করে চলার’

একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে মাথা উঁচু করে চলার, কারো কাছে মাথা নিচু না করা, নিজেদের গৌরব ও সম্পদ নিয়েই সামনে এগিয়ে চলার।

তিনি বলেন, ‘একুশের সেই শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলব, কারো কাছে মাথা নিচু করব না।’  আগামী প্রজন্মকেও এ জন্য নিজেদের তৈরি করার জন্য বলেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৭ সালের একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ভাষা-শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরবময় অবদান ও কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ ১৭ গুণী ব্যক্তির হাতে একুশে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি, ভাষা, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে যারা অবদান রেখেছেন তাদের খুঁজে পদক দিতে। তাদের সন্ধান পেতে আমরা কাজ করছি। যেসব গুণী ব্যক্তিত্ব এখনো আড়ালে আছেন, তাদের খুঁজে বের করে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হবে। দেশ-জাতির জন্য তাদের অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে আমরা কৃতার্থ হব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সব সময় দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করেছেন। ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যে আন্দোলন করা হয় সে সময় বঙ্গবন্ধু বারবার বন্দি হন।’

তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকে কীভাবে বাদ দেওয়া যায় তার জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বারবার এই ভাষার ওপর আঘাত এসেছে। আর বাংলার মানুষ তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। বাঙালির জাতির অর্জন অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে। আর এসব অর্জন যাতে হারিয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫৪ সালের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট সরকারই উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয়, একুশে ফেব্রুয়ারিকে মহান শহীদ দিবস হিসেবে পালন শুরু করে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগই দেশের পক্ষ থেকে ইউনেস্কোতে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাব দেয় এবং সেটি পাস হয়।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তান নানা রকম ষড়যন্ত্র করেছে। আর তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল রাজাকার, আলবদররা। সেই পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তারা কিছুদিন আগে একটা বই বের করেছে। ২৫ মার্চের গণহত্যার ছবিতে মুক্তিযোদ্ধারা হত্যা করেছে বলে ক্যাপশন দিয়ে সেগুলো প্রচারের চেষ্টা করে যাচ্ছে।’

বিশ্বে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। তাই এখন ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার প্রস্তাব করা হবে বলে উল্লেখ করে এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেতে আমাদের কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছুদিন আগে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হননি। মনে হচ্ছে তিনি পাকিস্তানিদের সঙ্গে একই সুরে কথা বলেছেন। শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন করা বাঙালি জাতির প্রতি অবমাননা ছাড়া আর কিছু নয়। বিশ্বের কোনো দেশে গণহত্যার সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে না। স্বাধীনতাযুদ্ধে যে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে তার চিহৃ এখন সারা বাংলাদেশে।’

পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। শিল্প-সাহিত্যসহ সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।


 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ইভা/এনএ/এএন 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়