ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জামিন নিয়ে বেরোনোর সময় হামলার শিকার ইমরান

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৬ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জামিন নিয়ে বেরোনোর সময় হামলার শিকার ইমরান

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে দায়ের করা মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। এ সময় তার সঙ্গে স্ত্রী নাদিয়া ছিলেন।

রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা সিএমএম আদালতের সামনের মূল ফটকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, রোববার সকাল ১০টার দিকে তিনি ঢাকা মহানগর হাকিম এসএম মাসুদ জামানের আদালতে জামিন নিতে আসেন। আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার পর বেলা সাড়ে ১১টার কিছু পর সিএমএম আদালতে উপস্থিত মিডিয়ায় মামলার বিষয়ে ব্রিফিং করেন তিনি।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মামলার বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। আদালত থেকে তাকে মামলার বিষয়ে জানানো হয়নি দাবি করে তিনি বলেন,  আদালতের প্রতি সম্মান রেখে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সমনের কথা জেনে আদালতে এসেছি।

তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে, মামলাটি করা হয়েছে আমাকে হয়রানি করার জন্য। আমি অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ন্যায্যতার পক্ষে রাজপথে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন করে থাকি। আমাকে হয়রানি করার জন্য বিভিন্ন জেলায় মামলা দেওয়া হয়েছে, যেন আমি চলমান যে আন্দোলন সেগুলো না করতে পারি। সে জায়গায় তারা অনেকটাই সাকসেসফুল। কেননা আমাকে আদালতে আসতে হয়েছে। এজন্য আমার সময় নষ্ট হচ্ছে।

মামলাটিকে হয়রানি মামলা উল্লেখ করে ইমরান এইচ সরকার বলেন, মামলাটি কোনোভাবে চলার সুযোগ নেই। কারণ একটা মিছিলে কী ধরনের স্লোগান হবে, সরকার তা ঠিক করে দিতে পারে না। একটা স্বতঃস্ফূর্ত মিছিলে মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসে। এখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ জানায়। আর এ প্রতিবাদের ভাষা ঠিক করে দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। সুতরাং এ ধরনের মামলা পরিচালনা করাই একটা খারাপ দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, এ ধরনের মামলা স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য মারাত্মকভাবে হুমকি।

এরপর স্ত্রীসহ সাদা রঙের প্রাইভেটকারযোগে তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটি সিএমএম আদালতে মূল ফটকের সামনে এলে কিছু দুষ্কৃতিকারী তার গাড়ি লক্ষ করে ডিম এবং ইট-পাথর ছুড়তে থাকে। এ সময় ইমরান এইচ সরকারের গাড়ি পিছিয়ে আসে এবং তিনি স্ত্রীসহ গাড়ি থেকে নেমে সিএমএম আদালতে দ্বিতীয় তলার ২৮ নম্বর আদালত কক্ষে উঠে আশ্রয় নেন।

প্রায় ৩০ মিনিট আদালত কক্ষে থাকার পর আবার নিচে নেমে এসে পুনরায় মিডিয়ায় হামলার বিষয়ে বলেন, আদালতে আসার পর যদি এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হয়, তাহলে আদালতের প্রতি মানুষ কীভাবে আস্থা রাখবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজকে আমি আদালতে এসেছিলাম। আদালতে আসার পর আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করা হলো। আমার গাড়ির ওপর হামলা করা হয়েছে, ইট-পাটকেল মারা হয়েছে।

গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সময় বোমা মারার প্রস্তুতি হামলাকারীদের ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, এখন আমি যাচ্ছি, আমার গাড়ির ওপর বোমা মারা হবে না তার নিশ্চয়তা কী? সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যারা আজকে এ হামলা করছে, তারা সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

এরপর তিনি আবার গাড়িতে করে পুলিশ পাহারায় স্ত্রীসহ বেরিয়ে যান।

ছাত্রলীগ এ হামলা চালিয়েছে বলে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। আর মামলার বাদী এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী দাবি করেন, উত্তেজিত জনতা এ হামলা চালিয়েছে।

এদিকে আদালতে ইমরান এইচ সরকারের পক্ষে জামিন শুনানি করেন এ কে এম সোহেল আহম্মেদ, কার্তিক চন্দ্র বক্তা, অ্যাডভোকেট প্রকাশ রঞ্জন দাশ।

আর বাদীপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া জামিনের বিরোধিতা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ৩১ মে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। ওইদিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ১৬ জুলাই আসামিদের সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৭/মামুন খান/মুশফিক  

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়