ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

যৌথ প্রযোজনা নয়, নিয়মেই মুক্তি পাচ্ছে কলকাতার সিনেমা

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫১, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যৌথ প্রযোজনা নয়, নিয়মেই মুক্তি পাচ্ছে কলকাতার সিনেমা

রাহাত সাইফুল: যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় সঠিক নিয়ম-নীতি না মানার প্রতিবাদে কয়েক মাস আগে আন্দোলনে নেমেছিল চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘চলচ্চিত্র পরিবার’। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ছিল, যৌথ প্রযোজনার সঠিক নিয়ম মানা হচ্ছে না। যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় ভারতের কলাকুশলী ও শিল্পী বেশি নেওয়া হচ্ছে এবং তাদের গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের নামে মাত্র নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুলে মিছিল ও মানববন্ধন করে চলচ্চিত্র পরিবার।

বিষয়টি আমলে নিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণ সাময়িকভাবে বন্ধ করে এবং নতুন করে খসড়া নীতিমালা তৈরি করে। এরপর থেকে আপাতত যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু নিয়ম মেনেই ভারতীয় সিনেমা বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। যৌথ প্রযোজনার সিনেমায় বাংলাদেশের শিল্পী ও কলাকুশলীর কাজের জায়গা থাকলেও ভারতীয় সিনেমায় সে সুযোগটুকুও নেই। এতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার কতটা লাভবান হচ্ছে? ঢাকাই চলচ্চিতই বা কতটা লাভবান হচ্ছে? এমন প্রশ্ন চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের।

কয়েক মাস আগে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায় ‘ইয়েতির অভিযান’ সিনেমাটি বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে নির্মাণ করছে। এতে ফেরদৌস, বিদ্যা সিনহা মিম, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ দুই বাংলার শিল্পীরা অভিনয় করবেন। কিন্তু হঠাৎ করেই যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মাণ বন্ধ হওয়ায় সিনেমাটি পরে যৌথভাবে নির্মাণ করা হয়নি। বাংলাদেশ থেকে ফেরদৌস-মিমকে রেখে বাকি সব শিল্পীকে বাদ দিয়ে ভারতীয় সিনেমা হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। কলকাতার সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত এ সিনেমাটি এবারের পূজায় কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। এটি খুব শিগগির বাংলাদেশেও মুক্তি পাবে বলে জানা যায়।

একইভাবে কলকাতার কমলেশ্বর মুখার্জি পরিচালিত ‘ককপিট’ সিনেমাটিও বাংলাদেশ-ভারতের যৌথভাবে প্রযোজনা করার কথা ছিল। এ সিনেমাটিতেও বাংলাদেশ ও কলকাতার শিল্পীদের চুক্তি করানো হয়। পরে সিনেমাটি আর যৌথভাবে নির্মাণ করা হয়নি। এ সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন ওপার বাংলার দেব, কোয়েল মল্লিক, রুক্মিনি মৈত্র। একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের রোশান। সিনেমাটি এবার পূজায় কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। পরে বাংলাদেশেও মুক্তি পাবে।

এ দুটি সিনেমায় শুধু ‘যৌথ প্রযোজনা’ কথাটি থাকছে না। ফলে থাকছে না বাংলাদেশের নাম। সাধারণভাবে এতটুকুই তফাৎ। তবে নিয়মের মধ্য দিয়েই সিনেমা দুটি বাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (সাফটা) আওতায় বাংলাদেশ থেকে একটি চলচ্চিত্র ভারতে রপ্তানি ও প্রদর্শনের বিপরীতে ভারতের কলকাতার একটি সিনেমা আমদানি করে দেশে দেখানো যাবে। এ আইন মেনেই সিনেমা দুটি বিনিময় করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ইয়েতির অভিযান’ সিনেমার গল্প ভালো এবং এতে ফেরদৌস, মিম অভিনয় করেছেন। তাই এ সিনেমাটি বাংলাদেশে দেখানো উচিৎ বলে মনে করি। তাই সিনেমাটি আমদানি করেছি। অন্যদিকে ‘ককপিট’ সিনেমায় রোশান, নাদের চৌধুরী ও খসরু ভাই অভিনয় করেছেন। যে কারণে এটিও বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাচ্ছি। প্রথমে এ সিনেমাগুলো আমরা যৌথভাবে নির্মাণ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে আর তা হয়ে ওঠেনি।’

এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সহাসচিব বদিউল আলম খোকন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভিনদেশীয় সিনেমা বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়া অবশ্যই আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়। নিয়ম থাকলেও আমাদের উচিৎ নয় কলকাতার সিনেমা বাংলাদেশে মুক্তি দেয়া।’

‘ইয়েতির অভিযান’ ও ‘ককপিট’র বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে ‘বসগিরি’ ও ‘প্রেমী ও প্রেমী’ চলচ্চিত্র দুটি।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রাহাত/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ