ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৭ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’

‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নাটকের মহড়ার দৃশ্য

বিনোদন ডেস্ক : ঢাকার প্রথম সারির নাটকের দল মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়। দলটির নতুন প্রযোজনা ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণালব্ধ একটি প্রযোজনা এটি।

দলটির ৪০তম এ প্রযোজনা নিয়ে ১০ মাস পাণ্ডুলিপি পর্যালোচনা ও পাঠচক্র হয়েছে। গত দেড়মাস একটানা মহড়া শেষে নাটকটির কারিগরি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাটকটির কারিগরি প্রদর্শনী হবে। আগামী ৩ ও ৪ আগস্ট নাটকটির উদ্বোধনী ও দ্বিতীয় প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

আনন জামান রচিত এ নাটকের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় রয়েছেন আশিক রহমান লিয়ন।

‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ প্রসঙ্গে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা হয় মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসানের। নাটকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। এটা এক নম্বর বিষয়। আর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পেলাম। এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য একটি মহল অনেক চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবকিছু উপেক্ষা করে বিচারকাজ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারে অনেকের নাম আসেনি, যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। তার মানে এটা বলছি না যে, বিচারকাজ সঠিক হয়নি। কিন্তু কোনো না কোনোভাবে কেউ কেউ বাদ পড়েছে। তাদের অনেকে মারা গেছে এ কারণে হতে পারে কিংবা রাজনৈতিক কারণও থাকতে পারে। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও সত্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড মঞ্চে উপস্থাপনার চেষ্টা করছি। এই প্রজন্মকে জানাতে চাই, বিচারের বাইরেও কিছু লোক রয়েছে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল, এদের মুখোশ উন্মোচন করার চেষ্টা করছি।’



তিনি আরো বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডনে যান তখন থেকে হত্যাকাণ্ডের প্রক্রিয়া শুরু। বঙ্গবন্ধু যখন ভারতে যান তখনও বঙ্গবন্ধুকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৭৫ সালে এসে কুচক্রী মহলটি সফল হয়। একটি ভূখণ্ডে জাতির জনক হয়ে ওঠার যে দীর্ঘ জার্নি অর্থাৎ ভাষা সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ, তিনি মানুষের নেতা কীভাবে হয়ে উঠলেন, কীভাবে জাতির জনক হয়ে উঠলেন তাও নাটকে তুলে আনার চেষ্টা করেছি।’

নাটকটি ঢাকার মঞ্চে মঞ্চায়নের পাশাপাশি জেলা শহরে প্রদর্শনী করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশের বড় সংখ্যক মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনা তুলে ধরেই এর উদ্দেশ্য বলে জানান মীর জাহিদ।

রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা হয় নাটকটির নির্দেশক আশিক রহমান লিয়নের। তিনি বলেন, ‘‘নাট্যকার আনন জামান রচিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের এবং ওই সময়ের রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের একটি ইতিহাস পাঠ হলো ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’। আমি নির্দেশক হিসেবে এই নাট্য প্রয়াসকে শুধু ইতিহাসের পাঠ হিসেবে না দেখে, তৎতকালীন ঘটনার গভীরে ঢুকে নাটকে উপস্থাপিত ইতিহাসের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বর্তমান প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।’’ 



নাটকটির একটি চরিত্রের নাম নট। এতে অভিনয় করছেন সামিউল জীবন। প্রস্তুতি প্রসঙ্গে রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘খন্দকার মোশতাক থেকে শুরু করে জিয়াউর রহমান, ফারুক, ডালিমের চরিত্র এ নাটকে রয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা যত বই আছে তার সবই পড়ার চেষ্টা করেছি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি, ফিল্ম, তার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ আমরা দেখেছি। প্রয়োজন পড়লে এখনো দেখছি।’

নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন কবির আহামেদ, ফারুক আহমেদ সেন্টু, মো. শাহনেওয়াজ, মনিরুল আলম কাজল, পলি বিশ্বাস, সামিউল জীবন, রাজিব হোসেন, শিবলী সরকার, শাহরিয়ার হোসেন পলিন, তারেকেশ্বর তারোক, আহাদুজ্জামান কলিন্স, সুমাইয়া তাইয়ুম নিশা, আরাফাত আশরাফ, স্বপ্নীল, আজহার, পিয়াসী জাহান, কাজী তারিফ, তাজুল রনি, রেদোয়ান, সিয়াম রাব্বি, জুনায়েদ, নূর আকতার মায়া, রাফি, রিফাত হোসেন জুয়েল, আমিনুল আশরাফ, ইকবাল চৌধুরী, মীর নাহিদ আহসান ও মীর জাহিদ হাসান।

নাটকটির নেপথ্য শিল্পীরা হলেন মঞ্চ, আলো, পোশাক ও আবহসংগীত পরিকল্পনায় আশিক রহমান লিয়ন। কোরিওগ্রাফিতে আমিনুল আশরাফ। অ্যানিমেশন সৈকত নাসির। আবহসংগীত সম্পাদনায় কাজী মোহাইমিনুল হক। পোস্টার ডিজাইন দেবেন্দু উদাস, রূপসজ্জা শিল্পী শুভাশীষ দত্ত তন্ময়। টিকিট ব্যবস্থাপনায় সৈয়দ লুৎফর রহমান। প্রচার ব্যবস্থাপনায় সৈকত নাসির ও কাজী সাইফ আহমেদ। প্রকাশনা ব্যবস্থাপনায় কানাই চক্রবর্তী ও বুলবুল আহমেদ। সেট ও প্রপস ব্যবস্থাপক রাজিব হোসেন। প্রযোজনা ব্যবস্থাপক ইকবাল চৌধুরী। মঞ্চ অধিকর্তা কবির আহামেদ। প্রযোজনা  সমন্বয়ক মো. শাহনেওয়াজ, প্রযোজনা অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান ও সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে আফজাল হোসেন।



নাটকটি নির্মাণে পৃষ্ঠপোষকতা করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুলাই ২০১৮/শান্ত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়