নিপুণ রায়সহ ১৩ জন কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ ১৩ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আব্দুস সামাদ আপেল জমাদার নামে এক আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা, ইউনুস মৃধা, আবুল হাশিম সবুজ, মামুন অর রশিদ, আমির হোসেন, মো. মহসিন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, ছাত্রদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রবিন, ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন উজ্জ্বল, ছাত্রদলের তিতুমীর কলেজ শাখার সহ-সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম, মাহফুজুল ইসলাম ও আয়ন আহম্মেদ শান্ত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক কামরুল ইসলাম আসামি আব্দুস সামাদ আপেল জমাদার বাদে অপর ১৩ আসামিক আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। আপেল জমাদারের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
আসামিপক্ষে নিপুণ রায়ের বাবা নিতাই রায় চৌধুরী, খোরশেদ মিয়া আলম, মহি উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ আইনজীবী ১৩ আসামির জামিন আবেদন করেন। আপেল জমাদারের রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবীরা।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ১৩ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আপেলের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।
নিপুণ রায়সহ কারাগারে যাওয়া প্রথম ছয় আসামির গত ১৬ নভেম্বর পাঁচ দিন, ১৯ নভেম্বর ইব্রাহিম হোসেনের তিন দিন, রবিন, উজ্জ্বল ও মাহবুবুল আলমের গত ২০ নভেম্বর ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। একই মামলায় এদিন আপেল, মাহফুজুল ইসলাম ও শান্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থিত করা হয়। এদের মধ্যে আপেলের রিমান্ড আবেদন করলেও অপর দুজনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় গত ১৪ নভেম্বর দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানসহ দুটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তা, দুজন আনসার সদস্যসহ ২৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। ওই দিন রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পল্টন থানায় পৃথক তিনটি মামলা করে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত করা হয়। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচনী আচরণবিধিতে ব্যান্ড পার্টি, ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শোডাউন করার নিষেধাজ্ঞা সত্বেও বিএনপিনেত্রী আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি মিছিল ফকিরাপুলের দিক থেকে ব্যান্ড পার্টি, ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শোডাউন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসে। এরপর নবী উল্লাহ নবী ও কফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে অপর দুটি মিছিল একই দিকে আসতে থাকে। মির্জা আব্বাস ৮ থেকে ১০ হাজার জনের একটি মিছিল নিয়ে কার্যালয়ে আসেন। তারা নয়াপল্টনের ভিআইপি রোড বন্ধ করে মিছিল ও শোডাউন করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার জন্য তাদের রাস্তার এক লেন ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়। তাদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি বিএনপি অফিসে অবস্থানরত রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের জানানো হয়। অফিসের মাইকের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার বিষয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ঘোষণা দিতে অনুরোধ করা হয়। এ সময় তারা ৬০ লাখ টাকার একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ নভেম্বর ২০১৮/মামুন খান/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন