ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘২৭ প্রার্থী কারাগারে’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘২৭ প্রার্থী কারাগারে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : গত সাত দিনে বিএনপির ২৭ প্রার্থীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নেওয়া হয়েছে এবং অন্তত ২ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের নেতা রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত ২ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চাপিয়ে দেওয়া শত শত মামলার বোঝায় নির্বাচনের মাঠ দূরে থাক, ঘরে পর্যন্ত থাকতে পারছে না ধানের শীষের প্রার্থীর নেতা-সমর্থকরা।’

‘যারা ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং প্রার্থী হয়ে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এধরনের ২৭ জন নেতা মিথ্যা মামলায় এখন কারাগারে আটক আছেন। নির্বাচনের মাঠে বিএনপিকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নামে-বেনামে, গায়েবি মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বন্দীত্বের লাল দেয়ালের ভেতরে ঘিরে রাখা হয়েছে।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মামলা আর পুলিশি হয়রানির কারণে নেতা-কর্মীরা ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এরপরও ক্ষান্ত হচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পরিবারের অন্য সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশি হেনস্তার ভয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্ভয়ে প্রচারণা চালাতে পারবেন কি না সে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন।’

সরকার ক্ষমতায় থাকতে ‘নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করছে’ অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই প্রহসনের অংশ হিসেবেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে সরকার গায়ের জোরে দূরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিপুল জনপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম জিয়া ও জনগণকেই শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় ভয়, তাই আইন-ন্যায়বিচারের তোয়াক্কা না করে সরকার বেগম জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বসে বসে কষছেন নির্বাচনে কারচুপির অভিনব মহাফন্দি। তারা জানেন, অন্যায় পথে নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া জনসমর্থনশূন্য আওয়ামী লীগের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের অন্য কোনো উপায় নেই। তাই নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে আবার ক্ষমতায় যেতে চান।’

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিরোধী দলের ওপর অত্যাচার নির্যাতন-নিপীড়ন এবং যতো রকম কৌশল আছে সরকার প্রয়োগ করছে। শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ কথাটা তামাদি করে ফেলেছে আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট নূরুল হুদা কমিশন। সরকারের পক্ষে ইসির নজিরবিহীন পক্ষপাতিত্ব ভোটারদেরকে হতাশ ও ক্ষিপ্ত করে তুলছে। নির্বাচন সামনে রেখে দেশব্যাপী গ্রেপ্তারের মহোৎসব চলছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে গ্রেপ্তারের পরিমাণ বেড়ে গেছে।’

অধিকাংশ রিটার্নিং অফিসার ‘আওয়ামী অনুমোদিত মনোবৃত্তির দ্বারা প্রণোদিত’ দাবি করে রিজভী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, আইন মন্ত্রণালয়ে জেলা দায়রা জজদের নিয়ে একটি সভা হয়েছে। সেখানে আইন সচিব নির্দেশ দিয়েছেন যে, নির্বাচনের পূর্বে তারা যেনো বিএনপির কাউকে জামিন না দেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গ্রেপ্তার বাড়াতে মনিটরিং সেলও খোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বদলে আসন্ন নির্বাচন আবর্জনাময় হয়ে উঠতে পারে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘কাজী রকিব যে পথে হেঁটেছেন বর্তমান সিইসি কে এম নূরুল হুদাও যেন সে পথেই চলতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, সেটাকে এক ডিগ্রি বৃদ্ধি করে নৈতিকতার মাথা খেয়ে নিজের ভাগিনাকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী করেছেন। তার সঙ্গে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বসে বৈঠকও করছেন।’

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ডিসেম্বর ২০১৮/রেজা/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়