ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘রাজনীতি প্রাণ, সিনেমা আমার অন্তর’

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘রাজনীতি প্রাণ, সিনেমা আমার অন্তর’

রাহাত সাইফুল : চিত্রনায়ক, পরিচালক, প্রযোজক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব-একাধিক পরিচয়ে পরিচিত তিনি। সব ছাপিয়ে ভক্তদের কাছে তার বড় পরিচয় তিনি ‘মিয়া ভাই’। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি।

গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় বিনোদন সাংবাদিকদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করেন নবনির্বাচিত এই সাংসদ। এসময় রাজনীতি ও চলচ্চিত্র নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদক। এ আলাপচারিতার বিশেষ অংশ তুলে ধরা হলো।

রাইজিংবিডি : চিত্রনায়ক হিসেবেই আপনার খ্যাতি। রাজনীতির মাঠে এই পরিচিতি কতটা কাজে লেগেছে বলে মনে করেন?
আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) :
নির্বাচনে জয়লাভের জন্য চিত্রনায়ক পরিচিতি ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। এজন্য জনগনের আগ্রহটা একটু বেশিই দেখিছি। তবে শুধু সিনেমার জন্য নয়, দীর্ঘদিন রাজনীতি করার জন্যই মনোনয়ন পেয়েছি।

রাইজিংবিডি : আপনার নির্বাচনী এলাকায় কোন কোন কাজে মনোযোগী হতে চাচ্ছেন?
আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) :
গত এক মাস ধরে আমি নিজে গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, ভাষানটেক এলাকায় ঘুরেছি। পায়ে হেঁটে নিজ এলাকার মানুষের কষ্ট দেখেছি, তাদের জন্য কাজ করতে চাই। অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে এখানে। এই এলাকার নৌকা যেহেতু আমার, কাজ আমাকেই করতে হবে। আমি ভেবেছিলাম গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, ভাষানটেক এলাকায় বেশী কাজ করা লাগবে না। বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে করতে চাই।

রাইজিংবিডি : চলচ্চিত্রের স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন আন্দোলনে আপনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন আপনি নির্বাচিত প্রতিনিধি। সেক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের জন্য কী করতে যাচ্ছেন?
আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) :
শুধু সিনেমার মানুষ হিসেবে আমাকে জনগণ সংসদে পাঠাননি। রাজনীতির মানুষ হিসেবে সংসদে পাঠিয়েছেন। দল থেকে আমাকে দেশের কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। মানুষের কাজ করতেই এমপি হয়েছি। আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জন্য কাজ করব।

রাজনীতি প্রাণ, সিনেমা আমার অন্তর। দুটোর কোনোটাই আমি এড়াতে পারব না। এখনো সংসদে যাইনি। সেখানকার পরিবেশ, কার্যক্রম সম্পর্কে আমি অজ্ঞ। সুযোগ পেলে চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে চলচ্চিত্রের কথা তো বলবই। একজন এমপি কখনো শুধু সিনেমার উন্নয়নের জন্য নির্বাচিত হন না। তাকে এলাকার লোকজনের জন্য কাজ করতে হয়। আর আমি যেহেতু সিনেমার মানুষ, সুযোগ পেলে সিনেমার জন্য কাজ করা বা কথা বলার বিষয়টি আমাকে মনে করিয়ে দিতে হবে না। আমি নিজেই সেই সুযোগ কাজে লাগাব।

রাইজিংবিডি : চলচ্চিত্রের সংকটময় অবস্থা থেকে বের হওয়ার উপায় কী বলে মনে করছেন?
আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) :
আজকাল তো সিনেমা দেখানোর সুযোগই পাচ্ছেন প্রযোজকরা। হলগুলো কুক্ষিগত হয়ে আছে নানা কৌশলে। সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেউ কেউ নিজস্ব অর্থায়নে প্রজেক্টর এনেছেন। সেগুলোকে সার্বজনীন ভাবনায় ব্যবহার করতে হবে। ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এগুতে হবে। একত্র থাকার বিকল্প নেই। আমাদের সবাইকে একসাথে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। সরকার এককভাবে এখানকার উন্নয়ন করতে পারবে না। প্রযোজক যদি সিনেমা বানিয়ে টাকা ফেরত না পান তবে তিনি থাকবেন না। আর প্রযোজক না থাকলে সিনেমাও শেষ। প্রযোজক বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে সবার আগে। ভালো গল্পের দরকার, টেকনোলজির উন্নয়ন দরকার। আর চলচ্চিত্রের মানুষদের একসঙ্গে বসা জরুরি।

রাইজিংবিডি : চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবি হলগুলো একটি সার্ভার সিস্টেমে নিয়ে আসার। এটার কতটা অগ্রগতি হবে?
আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) :
সার্ভার সিস্টেম খুবই ব্যয়বহুল একটি ব্যাপার। ৩০-৫০ কোটি টাকা লাগবে এটি চালু করতে। আমাদের এখানকার প্রেক্ষাপটে সরকার এইসব টেকনোলজি সম্পর্কে খুব একটা জানেও না। যারা সিনেমার মানুষ, তাদেরকে এটা নিয়ে কথা বলতে হবে। সোচ্চার হতে হবে। ব্যবসায়ীদের আগ্রহী করতে হবে সিনেমার উন্নয়নে এগিয়ে আসতে। একটা জায়গা তৈরি হলে সরকারও তখন সাহায্য করতে উৎসাহী হবে। আমি নিজের যেটুকু ক্ষমতা বা সুযোগ আছে সেটুকু দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমার প্রাণের সিনেমার মানুষেরা যেন ভালো থাকে তেমন কিছু করার।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জানুয়ারি ২০১৯/রাহাত/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়