খুলনায় জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য তারুণ্য সম্মিলন
মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম
খুলনায় জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য তারুণ্য সম্মিলন
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : ব্যানারে লেখা ‘জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য তারুণ্য সম্মিলন’। নিচে দাঁড়িয়ে আছে শতাধিক তরুণ। তাদের সবার দাবি শিল্পোন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলো কার্বন নির্গমন কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা রক্ষা ও জলবায়ু ন্যায্যতা দ্রুত কার্যকর করা।
রোববার দুপুরে খুলনার সরকারি বিএল কলেজ চত্বরে উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) ও অক্সফাম আয়োজিত এই তারুণ্য সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়।
তারুণ্য সম্মিলনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৩ নম্বর লক্ষ্যে স্পষ্ট করে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যের প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করে জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবিলায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গৃহীত প্যারিস চুক্তিতে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্প বিপ্লব পূর্ব সময়ের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
তারুণ্য সম্মিলনে আরো বলা হয়, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতিতে যতোটুকু নির্গমন কমানোর কথা বলা হয়েছে তাতে ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রিরও বেশি বেড়ে যেতে পারে। এতে বাংলাদেশের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় উপকূলীয় দেশগুলোতে ঘন ঘন নি¤œচাপ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, নদীভাঙন, খরা ও অতিবৃষ্টিসহ আবহাওয়ার ধীর ও ত্বরিৎ পরিবর্তনের কারণে মানুষ ও প্রাণি সম্পদের জীবনহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পাবে।
এ অবস্থায় বিজ্ঞানীরা উপকূলীয় প্লাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অন্যান্য দুর্যোগ এবং প্রথাগত জীবনযাত্রা ধ্বংস হলে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধুমাত্র বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে যাবে । কিন্তু জলবায়ু খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘকে ব্যবহার করছে। এভাবে তারা জলবায়ু-দুর্গতদের দুর্ভোগ ব্যবহার করে ঋণবাণিজ্য গড়ে তুলছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে যাবার আশঙ্কার মধ্যে থাকলেও উন্নত বিশ্ব এ বিষয়ে নীরবতা প্রদর্শন করে যাচ্ছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ) থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ১০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো জলবায়ু দুর্ভোগ ব্যবহার করে গরিব দেশগুলোকে ঋণ দিচ্ছে।
জলবায়ু ন্যায্যতার জন্য তারুণ্য সম্মিলনে উপস্থিত তরুণরা শিল্পোন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলোর কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা যথেষ্ট মাত্রায় বৃদ্ধি করা, নির্গমন কমানোর পরিমাণ যাচাই করার জন্য পরিবীক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ ১১ দফা দাবি জানান।
সম্মিলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কলেজছাত্র মেহেদী হাসান, রাজু আহমদে, সুমি আক্তার, হাবিব আহসান, রাকিব মুনশি, আবু তাহের প্রিন্স, নাজমুল হাসান এবং ক্লিন-এর শাহীনুর ইসলাম, নাসিম রহমান কিরন প্রমুখ।
রাইজিংবিডি/খুলনা/২৭ নভেম্বর ২০১৬/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন