ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুত’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুত’

সচিবালয় প্রতিবেদক : দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

আগামীকাল ১০ মার্চ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী জাতীয় দুর্যোগ দিবস পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। নগদ টাকা, পর্যাপ্ত খাবার, প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে। আমরা দেশবাসীর সহযোগিতায় যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করতে চাই।’ 

‘দুর্যোগের প্রস্তুতি সারাক্ষণ, আনবে টেকসই উন্নয়ন’- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সারা দেশে দিবসটি পালন করবে।

এর মধ্যে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আলোচনা সভাসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগের প্রস্তুতি বিষয়ে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ১০ মার্চ দিবসটি পালন উপলক্ষে ৬ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং বাণিজ্যিক ভবন, শপিংমল, আবাসিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ও জেলা-উপজেলায় অগ্নিনির্বাপণ মহড়াসহ যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী বলেন, দেশে মার্চ থেকে তিন মাস কালবৈশাখী ঝড়, বন্যা, খরা ইত্যাদি দুর্যোগ দেখা দেয়। তাছাড়া মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বছরে ৭/৮ মাস আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে থাকি।

তিনি বলেন, যেকোনো বিষয়ে প্রস্তুতি যত ভাল থাকে ফলও তত ভাল হয়। গতবার আমরা এ সময়ে ঝড়, বন্যার পূর্বাভাস পেয়ে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তাই আল্লাহর রহমতে ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়েছে। এবারও মার্চের শুরুতে এরকম পূর্বাভাস পাচ্ছি, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বজ্রপাত। তাই আগেভাগেই আমরা দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, যেকোনো সময় যেকোনো দুর্যোগ হানা দিতে পারে। তাই এর সফলভাবে মোকাবিলা করতে আমরা তাৎক্ষণিক, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিয়েছি।

তিনি বলেন, জনগণের সচেতনতার জন্য ‘১০৯০’ কলসেন্টার খোলা হয়েছে। বিনামূল্যে যখন তখন আপনি এ নম্বরে ফোন করে আবহাওয়া বার্তা জেনে নিতে পারবেন, অন্যকেও জানাতে পারেন। ঘূর্ণিঝড়, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে জনগণ ও সম্পদ রক্ষায় ১১৭টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। দেশে আরো ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী আরো বলেন, বন্যার আগেই বন্যাকবলিত ১৯ জেলায় আমরা ৬০ হাজার ঘরবাড়িকে ওয়াটার লেবেল করার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এমনভাবে এসব ঘর উঁচু করব যাতে কোনোভাবে বন্যায় তলিয়ে না যায়। সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির সহায়তায় সম্বলহীন দুস্থ মানুষ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধাদের এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘর উঁচু করে দেওয়া হবে। আর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি বাবদ বড় একটি প্রাপ্য এখনো পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ পাওনা রয়েছে। এ টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের কাছে আমাদের পাওনা আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিষয়টি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানাব। আশা করি তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব শাহ কামাল বলেন, ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ ৩২১ ভবন অপসারণের প্রক্রিয়া চলছে। ডিসিসি, রাজউক যৌথভাবে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এসব স্থাপনা থেকে সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে এসব ভবন খালি করে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। ৩২১ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে সরকারি ১৭টি, বাকিগুলো বেসরকারি। চারটি বিষয়ে আদালতে মামলা রয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৭/নঈমুদ্দীন/সাইফুল/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়