ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শ্লীলতাহানির শাস্তি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা!

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ৯ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শ্লীলতাহানির শাস্তি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা!

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নে এক মাদ্রাসাছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সালিশকারীরা অভিযুক্ত তিনজনকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। সালিশ ঘটনার পর এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বুধবার রাতে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের বানিয়ারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শ্লীলতাহানির শিকার ওই ছাত্রী উপজেলার কুশলা নেছারিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়ে।

অভিযোগ করা হয়, উপজেলার বানিয়ারী গ্রামের ওই মাদ্রাসা ছাত্রী ঘটনার দিন সকালে একটি এনজিও থেকে তার মায়ের নামে উত্তোলনকৃত ঋণের টাকার কিস্তি দিতে পাশের বাড়ি যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে স্থানীয় প্রভাবশালী রওশন চৌধুরীর ছেলে রুমান চৌধুরী (১৭), পান্নু চৌধুরীর ছেলে লেলিন চৌধুরী (১৯) ও কাইয়ুম চৌধুরীর ছেলে সাগর চৌধুরী (১৮) ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে।

এলাকায় জানাজানি হলে বিষয়টি নিয়ে বুধবার দিবাগত রাতে পার্শ্ববর্তী কান্দি গ্রামের রুস্তুম মাস্টারের বাড়িতে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুল্লাহ্ শেখ, এয়াকুব আলী শেখ ও স্থানীয় সালিশকারী ইউনুচ ব্যাপারী, রিয়াজ চৌধুরী, গাউচ চৌধুরীর সমন্বয়ে সালিশ বৈঠক বসেন। বৈঠকে ওই তিনজনকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, জরিমানার টাকা সালিশকারী রিয়াজ চৌধুরীর নিকট জমা দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বানিয়ারী গ্রামের এক যুবক বলেন, তিন বখাটে যে কাজটি করেছে তার জন্য সালিশ না করে আইনের হাতে সোপর্দ করা উচিত ছিল।

ওই ছাত্রীর মা বলেন, দুই মেয়েকে নিয়ে আমরা এখন আতঙ্কে রয়েছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বড় মেয়েকে আর মাদ্রাসায় পাঠাবো না। বখাটেরা আমার মেয়ের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা যেন অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে না ঘটে, সমাজপতিদের কাছে আমি এই দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে সালিশকারী রিয়াজ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু সময় সালিশ বৈঠকে থেকে বাড়ি চলে আসি।

সালিশে উপস্থিত কুশলা ইউনিয়নের মেম্বার ইয়াকুর আলি ও হাবিবুল্লাহ মোবাইল ফোনে জানান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জরিমানা করা তাদের এখতিয়ারের বাইরে। তারপরও শুধুমাত্র দরিদ্র ঘরের মেয়ের কলঙ্ক বাইরে জানাজানি হলে তাকে বাইরে আর বিয়ে দেওয়া যাবে না। তাই তারা মেয়েটির বিয়ে দেবার জন্য এবং যতটা গোপনে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করেছেন মাত্র।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ফারুক বলেন, ঘটনার বিষয়টি আমি শুনেছি। শোনার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনা সত্য হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/৯ মার্চ ২০১৭/বাদল সাহা/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়