ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাংলায় বই লিখেছেন মাইক শেরিফ

অহ নওরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাংলায় বই লিখেছেন মাইক শেরিফ

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক : না কোনো ইংরেজি বইয়ের অনুবাদ নয় এটি। সরাসরি বাংলাতেই বই লিখেছেন ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবক মাইক শেরিফ। দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মাঝে তার চোখে দেখা বাংলাদেশকে নিয়ে লিখেছেন ‘আমার জীবন এবং বাংলাদেশ’ শিরোনামের বইটি।

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘নাগরী’। দাম রাখা হয়েছে ২৬০ টাকা। প্রচ্ছদ করেছেন আল নোমান। নাগরীর ৩০৮ নম্বর স্টলে পাওয়া যাবে বইটি।

বইটি সম্পর্কে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, বইটির পাণ্ডুলিপি খণ্ডাকারে পড়েছি আমি। বাংলা তার মাতৃভাষা নয়, বইটি পড়ার সময় সেটা বোঝা যায়। কিন্তু সে কারণে বইটি পড়ার আনন্দ এতটুকু কমেনি। বইটি পড়লে তার চোখে বাংলাদেশকে অন্যভাবে দেখতে পারা যাবে। আমি তার সাফল্য কামনা করছি।

১৯৮৭ সালে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার হয়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করতে প্রথম বাংলাদেশে আসেন মাইক। বাংলাদেশে তার প্রথম ঠিকানা হয় কুড়িগ্রাম। সেই থেকে তিনি বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন।

শিশুদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তার প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। এছাড়া এ দেশে থাকতে থাকতে এখানকার ভাষার প্রতিও ভালবাসা জন্মে যায় তার। ২০০৬ সাল থেকে বাংলা শিখতে শুরু করেন তিনি।

 



মাইক শেরিফ বলেন, আমাকে বাংলা শিখতে সাহায্য করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অসিম চৌধুরী। এরপর ২০১০ ও ২০১৩ সালের মধ্যে আমি বাংলা ভাষায় ও লেভেল এবং এ লেভেল পরীক্ষা দিয়ে পাশ করি। এর পর থেকেই আমার বাংলায় একটি বই লেখার আগ্রহ জাগে।

বাংলায় নিজের বই প্রসঙ্গে মাইক শেরিফ বলেন, এর আগেও আমি বই লিখেছি। তবে বাংলা ভাষায় লেখা এটা আমার প্রথম গ্রন্থ। আমি দীর্ঘ দিন বাংলাদেশে আছি। এ দেশের অনকে জায়গা ঘুরেছি। এই বইয়ে আমার বাংলাদেশে আসা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় শিশুদের নিয়ে কাজ করাসহ আমার পুরো অভিজ্ঞতা এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে।

কেবল এই দেশ আর ভাষা নয়, এখানকার ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি সম্পর্কেও বিস্তর ধারণা রাখেন মাইক শেরিফ।  তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে আসার আগেই বাংলাদেশ সম্পর্কে জেনেছি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার জন্য এ দেশের অনেকে প্রাণ দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ১৯৯৯ সালে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো।

বাংলাদেশের লালন সংগীত ও আব্দুল করিমের গান খুব পছন্দ মাইক শেরিফের। তাদের কয়েকটি গান গাইতেও পারেন তিনি। মাইক শেরিফ বলেন, আমি সংগীত খুব ভালবাসি। ইংল্যান্ডে থাকতে পাশ্চাত্য সংগীত নিয়ে প্যারানয়া নামক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ভারতীয় উপমহাদেশের সংগীতও আমার খুব ভাল লাগে। আর বাংলাদেশের লালন সংগীত ও বাউল শাহ আব্দুল করিমের গান আমার মন কেড়েছে। এছাড়া সিলেট অঞ্চলের ধামাইল গান আমার খুব ভালো লাগে। আর আমি প্রচুর বাংলা বই পড়ি। রবীন্দ্র সংগীত শুনি। যা আমার লেখা বইয়ে উল্লেখ করেছি।

বইটির প্রকাশক সুফি সুফিয়ান বলেন, মাইক শেরিফের বইটি খুব সহজ বাংলায় লেখা। তবে তার দেখার চোখটি খুব অসাধারণ। এই বইটি পড়লে যে কেউ বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন করে জানতে পারবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/অহ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ