ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ক্ষত সারাতে বিস্ময়কর প্যাচ (ভিডিও)

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৫, ১০ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্ষত সারাতে বিস্ময়কর প্যাচ (ভিডিও)

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক: এমন একটি প্যাচ (স্মার্ট ব্যান্ডেজ) আবিষ্কৃত হয়েছে যা ত্বকের ক্ষত নিরাময়ে ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, বলা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ খুব দ্রুত ভালো করতে এটির জুড়ি মিলবে না- পরীক্ষামূলক চিকিৎসায় এমনটাই দেখা গেছে।

নতুন এই প্রযুক্তিটি টিস্যু ন্যানো ট্রান্সফেকশেন (টিএনটি) নামে পরিচিত। এতে ছোট্ট কয়েন আকৃতির একটি ন্যানোচিপ ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাত্র এক সেকেন্ডের জন্য চামড়ায় স্থাপন করা হয় এবং তারপর সরিয়ে ফেলা হয়। এ সময়ের মধ্যেই চিপটি জেনেটিক কোড ত্বকের কোষে প্রবেশ করায় এবং যেকোনো ধরনের কোষকে রক্তবাহী হিসেবে পুনঃস্থাপন করতে পারে। নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, এর প্রভাব দিনের মধ্যে দেখা যাবে।

ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে, ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটি উইক্সনার মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা এ প্রযুক্তিতে একটি ইঁদুরের মস্তিষ্কের ফাংশন স্ট্রোকের পরে পুনরুদ্ধার করেছেন এবং মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ইঁদুরের পা এই ডিভাইসের স্পর্শে মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ঠিক করেছেন। ইউনিভার্সিটির রিজেনেরেটিভ মেডিসিন এবং সেল-বেসড থিরাপি কেন্দ্রের পরিচালক ও এই গবেষণায় প্রধান বিজ্ঞানী ডা. চন্দন সেন বলেন, ‘এটি এক সেকেন্ডের অর্ধেক সময় নেয়। আপনি কেবল ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে এই চিপ একবার স্পর্শ করবেন এবং তারপর তুলে ফেলবেন। এটকু সময়ের মধ্যেই এটি কাজ করতে শুরু করবে।’

ডা. সেন বলেন, ‘আমরা ভাস্কুলার কোষগুলো তৈরি করতে ত্বকের কোষ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা ট্রান্সফরমেশন দেখতে শুরু করলাম। দ্বিতীয় সপ্তাহে সক্রিয় ব্লাড ভেসেল গঠিত হয়েছিল এবং তৃতীয় সপ্তাহে ইঁদুরের পা ঠিক হয়ে গিয়েছিল- অন্য কোনো ধরনের চিকিৎসা ছাড়াই।’

গবেষণা সহযোগী এবং ওহিওর কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যাপক ড. জেমস লি বলেন, ‘এটি জিন থেরাপি নামে পরিচিত ধারণাটিকে প্রসারিত করে এবং বেশ কিছু সময় ধরেই ব্যবহৃত হচ্ছে। আমাদের প্রযুক্তির সঙ্গে অন্যান্য প্রযুক্তির পার্থক্য হলো আমরা কীভাবে কোষে ডিএনএ সরবরাহ করি এটা নিশ্চিত করা।’

নির্দিষ্ট জিনগত কোড বা নির্দিষ্ট প্রোটিন দিয়ে লোড করা চিপটি ত্বকের ওপর স্থাপন করা হয় এবং টিস্যুতে একটি ছোট বিদ্যুৎপ্রবাহ চ্যানেল তৈরি করে। ডিএনএ বা আরএনএগুলো সেই চ্যানেলগুলোতে প্রবেশ করে কোষগুলোকে রুট করে এবং কোষগুলোকে পুনঃপ্রকাশ করতে শুরু করে। ন্যাচার ন্যানোটেকনোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, কৌশলটি ৯৮ শতাংশ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে। ডা. সেন বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি চমকপ্রদ ঘটনা হচ্ছে, এটি কেবল ত্বকেই কাজ করে না, যেকোনো ধরনের টিস্যুতে কাজ করে।’

এমনকি গবেষকরা ইঁদুরের ত্বকের ওপর মস্তিষ্কের কোষ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। তারপর সেই কোষ কেটে আহত ইঁদুরের মস্তিষ্কে প্রবেশ করিয়েছেন। স্ট্রোক থাকার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে ইঁদুরের মস্তিষ্কের ফাংশন পুনরুদ্ধার হয় এবং ইঁদুরটি সুস্থ হয়। কারণ কৌশলটি রোগীর নিজস্ব কোষ ব্যবহার করে এবং ওষুধের ওপর নির্ভর করে না। গবেষকরা আশা করছেন, এটি এক বছরের মধ্যে মানব পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত হবে।
 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ আগস্ট ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়