ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যেসব কারণে চিকিৎসককে বয়কট করবেন (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫৩, ১ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যেসব কারণে চিকিৎসককে বয়কট করবেন (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল: চিকিৎসাসেবা মহৎ পেশা। চিকিৎসকরা অসুস্থ মানুষকে সেবা দিয়ে সুস্থ করেন কিংবা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচান। তা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষের ধারণা, চিকিৎসকরা রোগীর কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেন। সব চিকিৎসক এমন নন। কিছু চিকিৎসকের অসততার কারণে তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়।

অসৎ বা খারাপ মনোবাসনাপূর্ণ চিকিৎসক চেনার অনেক উপায় রয়েছে। অসৎ চিকিৎসকদের চেনার ১৪টি লক্ষণ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনে আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* মনোযোগ দিয়ে কথা শোনেন না : একজন ভালো চিকিৎসক অবশ্যই তার রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কথা ভালোমতো না শুনে যে চিকিৎসক প্রেসক্রিপশন লিখতে বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যস্ত থাকেন তাকে বর্জন করতে পারেন। আপনার চিকিৎসক আপনার কথা না শুনলে তার কাছ থেকে ভালো সেবা আশা করতে পারেন না।

* অন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে অনুৎসাহিত করে : এমডি ইনসাইডারের সিইও ডেভিড নরিস বলেন, কিছু ক্ষেত্রে প্রায় ৫০ শতাংশ রোগীর রোগ নির্ণয়ে ভুল হয়। এটি অবধারিতভাবে ভালো চিকিৎসকের লক্ষণ নয়। যেহেতু মেডিসিন একটি জটিল বিজ্ঞান তাই আপনার ডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয় সঠিক হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে সেকেন্ড অপিনিয়ন বা অন্য কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ভালো চিকিৎসকরা আপনাকে রেফারেলও দিতে পারেন। কিন্তু যদি আপনার চিকিৎসক তার কথার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন যে অন্য কোনো অপিনিয়নের প্রয়োজন নেই, তাহলে অন্য চিকিৎসকের কাছে যান।

* রোগ নির্ণয়ে বারবার ভুল টেস্ট : রোগ নির্ণয়ে যেখানে একবার ভুল টেস্ট হওয়া কঠিন, সেখানে বারবার ভুল টেস্ট দেওয়া হলে নিশ্চিত হতে পারেন, কোনো মারাত্মক ভুল হচ্ছে। আপনার চিকিৎসক আপনাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার জন্য যথেষ্ট সময় না নিলে, সঠিক ইতিহাস অনুসন্ধান না করলে, অফিসের কার্যপ্রণালী ত্রুটিপূর্ণ হলে অথবা তিনি অনভিজ্ঞ হলে কিংবা অন্যান্য সমস্যা থাকলে রোগ নির্ণয়ে ভুল টেস্ট দেওয়াটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে আপনার এমন চিকিৎসকের খোঁজ করা উচিৎ যিনি আপনার স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকৃত উৎস নির্ণয় করতে সমর্থ।

* নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ওষুধ সেবনে পরামর্শ : নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, ৯৪ শতাংশ চিকিৎসকের সঙ্গে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কোনো না কোনোভাবে সম্পর্ক আছে। যার মানে হচ্ছে- তারা ফ্রি স্যাম্পল, গিফট অথবা কোনো নির্দিষ্ট ওষুধের জন্য মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ থেকে পেমেন্ট পেয়ে থাকে। এটি তাদের প্রেসক্রিপশনের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলে। কোনো নতুন ওষুধ সম্পর্কে তথ্য দেওয়া ভিন্ন কথা, কিন্তু যদি আপনার চিকিৎসক আপনাকে সবসময় নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের ওষুধ সেবনে পরামর্শ দেন, তাহলে অন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারেন।

* অযথা ব্যথানাশক ওষুধ প্রেসক্রাইব: যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি ওপিওইড (আফিম জাতীয় ওষুধ) ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু সেখানে মধ্যবয়সি ব্যক্তিদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে ওপিওইডের অতিমাত্রায় ব্যবহার। এখনো বিশেষজ্ঞরা এর জন্য দায়ী কে তা অনুসন্ধান করছে, কিন্তু এ কথা অস্বীকার করা যায় না যে যেসব চিকিৎসক ব্যথানাশক ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন তারাও এর অংশ। কেউই দীর্ঘস্থায়ী ও অত্যধিক ব্যথা চায় না, কিন্তু আপনার চিকিৎসকের উচিৎ হবে কোনো নির্দিষ্ট অবস্থার প্রেক্ষিতে সীমিত পরিমাণে এ জাতীয় ব্যথানাশক প্রেসক্রাইব করা, অন্যথায় এতে আসক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

* হাত অপরিষ্কার রাখেন : বর্তমানে রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে হ্যান্ডওয়াশিং বা হাতধোয়া। এ বিষয়ে জানা সত্ত্বেও অনেক চিকিৎসক রোগী দেখার আগে হাত ধোয়ার বিষয়টি এড়িয়ে চলেন। এক গবেষণায় জানা যায়, মাত্র ২২ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ স্ট্যান্ডার্ড বজায় রেখে হ্যান্ডওয়াশ করেন। আপনার চিকিৎসকের অফিসে হ্যান্ড-স্যানিটাইজিং জেল বা সাবান এবং প্রত্যেক রোগীর রুমে পানি থাকা উচিৎ। আপনাকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার পূর্বে চিকিৎসক হাত ধুয়ে নিচ্ছেন কিনা লক্ষ্য করুন।

* প্রয়োজনীয় সনদ না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা প্রদান: ভুয়া চিকিৎসক এড়াতে আপনি যে বিষয়ে সেবা নিতে চান সে বিষয়ে আপনার চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় সনদ আছে কিনা নিশ্চিত হোন। এমন চিকিৎসকের অনুসন্ধান করুন যিনি আপনার সমস্যা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ। সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা পেতে বোর্ড-সনদপ্রাপ্ত মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন :



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ মার্চ ২০১৮/ফিরোজ/মারুফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়