ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

পুলিশকে প্রথম তথ্য দেয় চার্লি-৭

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুলিশকে প্রথম তথ্য দেয় চার্লি-৭

মাকসুদুর রহমান : নিরাপত্তার স্বার্থে চার্লি, ডেলটা, কিলোসহ অনেক সাংকেতিক  ভাষা ব্যবহার করেন পুলিশ সদস্যরা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার প্রস্তুতির তথ্য প্রথম আসে চার্লি -৭ এর মাধ্যমে।

 

রাজারবাগ পুুলিশ লাইন্সে পুলিশের বাঙালি সদস্যরা পাকিস্তানি বাহিনীকে মোকাবিলা করার জন্য সশস্ত্র প্রস্তুতি নিতে থাকে। পুলিশের যাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধকালীন চার্লি সম্পর্কে এভাবেই লেখা রয়েছে।

 

উল্লেখ করা হয়েছে, ওইদিন রাত ১০টায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে টহলরত একটি পুলিশ পেট্রোল পার্টি (চার্লি-৭) বেতার মারফত জানায়, সেনাবাহিনীর একটি বড় কনভয় যুদ্ধসাজে শহরের দিকে এগুচ্ছে। এরপর একই বার্তা থেকে জানানো হয় তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে সেনাবাহিনীর অন্তত ৭০/৮০টি সাঁজোয়া যান প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছে। এছাড়া সারাদিন এই মাধ্যম থেকে আসা তথ্যে শহরের বিভিন্ন জায়গার অবস্থান নিশ্চিত করতে থাকেন মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা। রাত ১১-৩৫ মিনিটে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা অস্ত্রাগারের ঘণ্টা পিটিয়ে সবাইকে সতর্ক ও একত্রিত করেন।

 

কর্তব্যরত সেন্ট্রির রাইফেল থেকে গুলি করে অস্ত্রাগারের তালা ভাঙা হয় এবং তৎকালীন আরআই মফিজ উদ্দিনের কাছ থেকে জোর করে অস্ত্রাগারের চাবি নিয়ে নিজেদের মধ্যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিতরণ করে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণের চুড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়। রাত ১১-৪০ মিনিটে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের প্রধান ফটকে এসে পৌঁছায় পাকিস্তানি সৈন্যরা।

 

এ সময় বাঙালি পুলিশ সদস্যরা কৌশলগত স্থানে অবস্থান করতে থাকে। একই যন্ত্রের মাধ্যমে আক্রমনের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে সারাদেশে জেলা ও সাব ডিভিশনগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রথম গুলিবর্ষণ হয়। সঙ্গে সঙ্গে প্যারেড গ্রাউন্ডের উত্তর-পূর্ব দিক থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় ব্যারাকের ছাদে অবস্থানরত বাঙালি পুলিশ সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে। শুরু হয় পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। ইতিহাসে সূচনা হয় একটি নতুন অধ্যায়ের।

 

মুক্তিযুদ্ধকালিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক বই লিখেছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জাকির হোসেন মজুমদার। পুলিশ যাদুঘরের তত্ত্বাবধানও তিনিই করছেন। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ওই সময় অনেককেই আগে থেকে তথ্য দেয়ার নির্দেশ দেওয়া ছিল। কিন্তু সবার আগে চার্লি-৭ শত্রুপক্ষের সর্বশেষ অবস্থান জানায়। যা বাঙালি পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুতি নেওয়া এবং মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক হয়। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পাকিস্তানি বাহিনী রাজারবাগ থেকে পালিয়ে যায়।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ডিসেম্বর নভেম্বর ২০১৬/মাকসুদ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়