ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভিন্ন আঙ্গিকের কিছু স্কুল (শেষ পর্ব)

রুহুল আমিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভিন্ন আঙ্গিকের কিছু স্কুল (শেষ পর্ব)

রুহুল আমিন : প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য মানুষকে স্কুলে যেতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের শিক্ষা পদ্ধতি। বিষয়বস্তুও বিভিন্ন রকম। কোথাও শিক্ষার্থীরা সুযোগ-সুবিধা বেশি পায়, কোথাও কম।

আবার বিষয়ের ভিন্নতার কারণে স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষাগ্রহণের পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। এমনকি প্রয়োজনে স্কুল ভবনেরও বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এমনি কিছু ভিন্ন ঘরানার স্কুল নিয়ে এ আয়োজন।

সম্পূর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর স্কুল : এই স্কুলটি আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায়। এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রথাগত শিক্ষা পদ্ধতির কিছুই নেই এখানে। শিশুরা যেন খুব সহজে কোনো কিছু নিয়ে ভাবতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখা হয় এই স্কুলে।



আর তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়। শিশুরা আইপ্যাডের মাধম্যে তাদের উপস্থিতি দিয়ে থাকে। থ্রি ডি মডেলিং সফটওয়ার ডিজাইন কি করে করতে হয় তা শিখে।এই স্কুলে ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা পড়াশোনা করে।

স্টিভ জবস স্কুল : নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামের এই স্কুলে সব শিক্ষার্থীকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে একই ধরনের ব্যবহার করেন।



প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজেদের মেধা, দক্ষতা ও আগ্রহ অনুযায়ী পড়ালেখার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা ছয় সপ্তাহ পর পর শিক্ষার্থী, তাদের বাবা-মা ও শিক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন হয় এবং নতুন পরিকল্পনার সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হয়।

যে স্কুলে সৃজনশীলতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয় : আমেরিকার নিউইয়র্কে স্কুলটি অবস্থিত।  এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বাস করেন স্কুল হওয়া দরকার অনেকটা খেলার মাঠের মতো।



শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পড়াশোনার ব্যাপারে খুব আগ্রহী করে তোলা হয় এবং সৃজনশীল হওয়ার জন্য তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের ইলেট্রনিক্স জিনিস কিভাবে পুনর্ব্যবহার করা যায় তাও শেখানো হয়। তাদের থ্রি মডেল বানানো শেখানো হয় এবং এই রকম আরো মজাদার অনেক কিছু করতে শিশুদের আগ্রহী করে তোলা হয়।

যে স্কুল ম্যাজিক ওয়ার্ল্ডের মতো : প্রথাগত স্কুলে অনেক সময় শিশুরা একঘেয়েমিতে ভোগে।  এজন্য সুইডেনের স্টকহোমের এই স্কুলটি একটু ভিন্নভাবে নির্মাণ করা হয়।



এই স্কুল নির্মাণের সময় নকশাবিদ এমনভাবে এর নকশা করেছেন যেখানে শিক্ষার্থীদের কাছে মনে হয় স্কুলটি যেন জাদুর জগৎ। এই স্কুলে কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই।  পুরো ভবনে বিশাল জায়গাজুড়ে খালি স্থান। শিক্ষার্থীরা তাদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে। তাদের শেখার পরিকল্পনায় সঙ্গীত, নাচ ও শিল্প অন্তর্ভুক্ত আছে।

যে স্কুলে কোনো বিষয় নেই : কানাডার  টরেন্টোতে এই স্কুলটি অবস্থিত। এটি এমনই এক স্কুল যেখানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হয় না। এখানে শিক্ষকরা পড়াশোনার ব্যাপারে কেবল পরামর্শ দিতে পারে কিন্তু বল প্রয়োগ করতে পারেন না।



এই স্কুলে কোনো হোমওয়ার্ক অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয় না, নেই কোনো সিলেবাস। বয়সের কোনো বিধি নিষেধ নেই, শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ক্লাসে উপস্থিত হয়। স্কুল চলার সময় কিভাবে সময় কাটাবে এবং কি করবে এই ব্যাপারে শিশুরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

পৃথিবীর সবচেয়ে সবুজ স্কুল : এই স্কুলটি ফ্রান্সে। এই স্কুলে এতো সবুজ ঘাস রয়েছে যে প্রতি বর্গমিটার জায়গা লন হিসেবে ব্যবহার করা যায়। স্কুল ভবনটির ছাদ, পেছনের অংশ ও সামনের উঠোন ঘাসে ভরপুর।



এই স্কুল কর্তৃপক্ষের কথা হলো ধূলিময় ক্লাসরুম শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। শিক্ষার্থীরা যদি বাইরে ক্লাস করে তবে তারা খোলা বাতাস পাবে। যখন আবহাওয়া গরম থাকে তখন শিক্ষার্থীদের ক্লাস লনে নেওয়া হয়।

যে স্কুলে শেখার জন্য কোনো জোরাজুরি নেই : এই স্কুলটি ফিনল্যান্ডে। এই স্কুলে ক্লাস চলার সময় শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকে। তারা চাইলে ক্লাসের যেকোনো স্থানে বসতে পারে।



ক্লাস চলার সময় একজন আরেকজনের সঙ্গে গল্প করতে পারে। লাফালাফি করতে পারে, ক্লান্ত হলে সোফায় শুয়ে পরতে পারে। ক্লাসের পরিবেশ খুব ইতিবাচক। এই স্কুলে পাঠাগার, ব্যায়ামাগার, অ্যাসেম্বলি হল ও ইয়ুথ ক্লাব রয়েছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/রুহুল/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়