ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

টেকনাফ-তেঁতুলিয়া দৌড়ে রেকর্ড গড়লেন আরাফাত

ছাইফুল ইসলাম মাছুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৮ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টেকনাফ-তেঁতুলিয়া দৌড়ে রেকর্ড গড়লেন আরাফাত

ছাইফুল ইসলাম মাছুম : যে ছেলের শৈশব কেটেছে গ্রামের অন্য দশটি ছেলের মতো। বন্ধুদের সঙ্গে দুষ্টামি, দৌড়ঝাপ, সাইকেল চালিয়ে আর পুকুরে সাঁতার কেটে পার করে দিতেন পুরো দিন। সে ছেলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া দৌড়ে জয় করবেন বাংলাদেশ, একহাজার কিলোমিটারের বেশি দৌড়ে গড়বেন নতুন রেকর্ড, তা হয়তো কেউ কখনো ভাবেনি।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দৌড়ে রেকর্ড গড়লেন মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুসাপুর গ্রামে। পিতা মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন ও মাতা বিলকিস আরা বেগম।

চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের নোয়াপাড়া পরিবেশ টাওয়ার থেকে ‘দ্য গ্রেট বাংলাদেশ রান- রান ফর হেলদি বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে দৌড়ের যাত্রা শুরু করেন। এই যাত্রা ৬ মার্চ তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধার জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ করেন। তার এই ম্যারাথন দৌড়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ কি.মি. এর বেশি পথ পাড়ি দিয়েছেন। তার লক্ষে পৌঁছাতে ২০ দিন সময় লেগেছে। এই ২০ দিনে তিনি ১০০৪ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়েছেন।

আরাফাত বলেন, এ যাত্রা মোটেও সহজ ছিল না। হাঁটুর ইনজুরি নিয়ে প্রায় ১৫ দিনের মতো দৌড়েছি আমি। মহাসড়কে দ্রুত গতিতে ছুটে চলা যানবাহন একটা বড় ঝুঁকি ছিল। যমুনা সেতু ওপর দৌড়ানোর অনুমতিও পাইনি। সাঁতার কেটে পার হতে হয়েছে প্রবল খরস্রোতা যমুনা নদী। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি জেরার মুখেও পড়তে হয়েছে। যদিও উদ্দেশ্য জানতে পেরে পরে উৎসাহও দিয়েছেন তারা। তবে সাধারণ মানুষ দিয়েছেন অকুণ্ঠ সমর্থন।

তিনি বলেন, আমার এই দৌড়ানোর উদ্দেশ্য হল- সুস্থ থাকার জন্য দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই এ তথ্য সকলকে জানানো এবং ম্যারাথনে আগ্রহী করে তোলা। তিনি আরো বলেন, সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য প্রতিদিন অন্তত ১ কি.মি. দৌড়ান। নিজে সুস্থ থাকুন, পরিবারকেও সুস্থ রাখুন।



আরাফাত বর্তমানে কাজ করছেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে। এর পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসকে নিয়েছেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে।

আরাফাত রাইজিংবিডিকে বলেন, অনেকেই মনে করেন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করতে পেশাদার হতে হয়। অপেশাদার মানুষেরাও যে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করতে পারে, আমি সেই ম্যাসেজ সবাইকে দিতে চাই।

এর আগে তিনি টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে তিন বার বাংলা চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দিয়েছেন। অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ম্যারাথনে। এখন তার স্বপ্ন ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দেওয়া। দৌড়, সাঁতার, সাইক্লিংসহ বিভিন্ন পরিশ্রমসাধ্য ক্রীড়ার সমন্বয়ে পৃথিবী বিখ্যাত আয়রন ম্যান টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়াও আরাফাতের স্বপ্ন।

রাইজিংবিডিকে আরাফাত জানান, পৃথিবী বিখ্যাত যেসব অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি, সে সব অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টেসে তিনি বাংলাদেশের নাম লেখাতে চান। উড়াতে চান লাল সবুজের বিজয় নিশান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ এপ্রিল ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়