ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

যুবরাই শক্তি

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ১ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যুবরাই শক্তি

প্রতীকী চিত্র

শাহ মতিন টিপু : এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়- কবিতার এই চরণটি যেন চিরন্তন উপমা এখন। কারণ, যুবদের দ্বারাই সৃষ্টির ইতিহাস গড়ে তোলা সম্ভব।  জাতীয় যুব দিবস আজ।  এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘যুবদের জাগরণ, বাংলাদেশের উন্নয়ন’।

বাংলাদেশের ‘জাতীয়  যুব নীতিমালা’ অনুসারে আবার ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের ‘যুব’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।  মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই যুব।  তারুণ্যের এ বয়সটিকেই  ‘যুদ্ধে যাবার সময়’ হিসেবে গণ্য করা হয়। না, এ যুদ্ধ ঢাল-তলোয়ারের নয় ; এ যুদ্ধ সকল অকল্যাণের বিরুদ্ধে, ন্যায়ের পক্ষে আর নিজেকে গড়তে।

যুবরাই শক্তি। যুব সমাজ হচ্ছে তারুণ্যের প্রতীক। যৌবনই মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। জাতির সমৃদ্ধি, সম্মান ও জাতীয় অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারে যুবরাই। বলা হয়ে থাকে, ইতিহাস লিখেন বয়স্করা কিন্তু তৈরি করে তরুণরা। আর বাংলাদেশের তরুণদেরও রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস।

এ দেশের যুব সমাজ বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বায়ান্ন এর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টি’র শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে ।

এটা নিঃসন্দেহ যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় অংশীদার ও শ্রমশক্তির মূল যোগানদাতা এই যুব সম্প্রদায়। অভিবাসন ও দেশের তৈরি পোষাক খাতে যুবরাই কাজ করছে।  দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে যুববান্ধব সমাজ গঠনের বিকল্প নেই।   তরুণদের সৃজনশীল বা দেশমাতৃকার কল্যাণে নিবেদিতের যেমন উদাহরণ রয়েছে তেমনি ঐশীর মতো ভুল পথে যাওয়া তরুণ বা যুব সমাজও চোখে পড়ে।

পর্যাপ্ত মানসিক সুস্থ থাকার পরিবেশ না পাওয়ায় তরুণরা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ও প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং পারিবারিক অনুশাসন ও মানসম্মত শিক্ষার অভাবের কারণে তরুণরা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে। যুবদের কাছে কিছু  পেতে মানসিক সুস্থ থাকার পরিবেশ তাদের নিশ্চিত করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে মাদক পর্ণোগ্রাফি, বেকারত্ব, অস্ত্রবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে যেন বিপথগামী না হতে পারে।

রাজনীতিতে একসময় তরুণ-মেধাবীরা এগিয়ে আসলেও এখন ধরণটি পাল্টেছে। এখন ছাত্রসমাজ বা তরুণ সমাজকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো খুব বেশি আগ্রহ দেখায় ভোটের সময়। কারণ দলগুলো জানে, এ বৃহৎ অংশের ভোট অর্জন করতে পারলেই জয় সুনিশ্চিত।  এ ধারার ইতিবাচক পরিবর্তন না ঘটালে যুব সমাজকে দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব হয়ে যাবে।

দিবসটি উপলক্ষে আজ দুপুরে রাজধানীতে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। বেলা আড়াইটায় হোটেল ওয়েস্টিনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, কমনওয়েলথ ও সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সমন্বিত উদ্যোগে দেশি-বিদেশি যুব প্রতিনিধি, যুববিষয়ক বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক এবং স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এছাড়া আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প স্থাপনে দৃষ্টান্তমূলক অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ২২ জন সফল আত্মকর্মী যুবক ও পাঁচ সফল যুব সংগঠককে জাতীয় যুব পুরস্কার-২০১৭ দেওয়া হবে। যুব দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওসমানী মিলনায়তনে পুরস্কারপ্রাপ্ত যুবক ও যুব নারীর উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী করা হবে। রাষ্ট্রপতি এ প্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ নভেম্বর ২০১৭/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়