ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দারুণ সব ঐতিহ্যে বড়দিন উদযাপন

আফরিনা ফেরদৌস || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:০০, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দারুণ সব ঐতিহ্যে বড়দিন উদযাপন

প্রতীকী ছবি

আফরিনা ফেরদৌস : আজ ২৫ ডিসেম্বর। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন।

সান্তাক্লজের উপহার, ক্রিসমাস গাছ সাজানো ও প্রার্থনায় বাংলাদেশে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা উদযাপন করবে বড়দিন। কিন্তু আপনি শুনলে অবাক হবেন যে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই উৎসব উদযাপনে চমকপ্রদ রীতি রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ইউক্রেন : ইউক্রেনে বড়দিন পালন করা হয় এক আজবভাবে। তারা ক্রিসমাস ট্রি বা বড়দিনের গাছে ওয়েব আকৃতির মাকড়সা ঝুলিয়ে রাখেন। এটি মূলত দরিদ্র মানুষরা করে থাকেন, যাদের ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই। বড়দিনের সকালে তাদের শিশুদের যখন ঘুম ভাঙে, তখন সকালের আলোয় এই ওয়েব আকৃতি চক চক করতে থাকে, যা দেখে তাদের বাচ্চারা খুশি হয়ে যায়।

জ্যামাইকা : জ্যামাইকাতে মানুষ তাদের জাতীয় পোশাক পরে রাস্তায় নেমে পড়ে। একটি উৎসব মুখর দিন থাকে বড়দিনের দিনে। নাচের সঙ্গে সঙ্গে বক্সিংয়েরও আয়োজন থাকে এই দিনে। বেশিরভাগ নাচই আফ্রিকান স্টাইলে হয়।

স্পেন : স্পেনে বড়দিন উদযাপনের অন্যতম অংশ হচ্ছে, বিশেষ ধরনের একটি খাবার, যাতে থাকে মধু, ডিমের সাদা অংশ, চিনি, আলমন্ড বাদাম ইত্যাদি।

গ্রেট ব্রিটেন : বড়দিনে ঘরের ডেকরেশনে সবকিছুর আগে ‘মিস্টলেটো’ নামক এক ধরনের বিশেষ লতা ঝুলানো হয় এবং এটাই গ্রেট ব্রিটেনের রীতি। তবে এই লতার নিচে দাঁড়িয়ে চুম্বন করাটা স্ক্যান্ডিনাভিয়ান রীতি বলে ধরা হয়।

হল্যান্ড : হল্যান্ডে বাচ্চারা ডিসেম্বরের ৫ তারিখেই সান্তাক্লজের কাছ থেকে বড়দিনের উপহার পেয়ে যায়। দিবসের দিনটিতে নয়। কেউ যদি শান্তার ঘোড়ার জন্য গাজর ছুড়ে রাখে তাহলে শান্তা তাকে উপহার দিয়ে যায়।

জাপান : জাপানের শিশুরা তাদের বড় দিনের উপহার পায় তাদের বালিশের নিচ থেকে। জাপানে বড়দিনের ঐতিহ্যবাহী খাবার হল ফ্রাইড চিকেন।

নরওয়ে : নরওয়েতে ঘরের সমস্ত ঝাড়ু লুকিয়ে রাখা হয়, যেন ঝাড়ুতে চড়ে মধ্যরাতে ডাকিনী কোনো কিছু চুরি করতে না পারে।  তারপর সেগুলো মাঝরাতে উপহার দেওয়া হয় অশুভ আত্মাদের। এছাড়া খামার রক্ষা করার জন্য এক বাটি বিশেষ খাবার রাখা হয় খামারে।

জার্মানি : জার্মানরা ক্রিসমাস উপলক্ষে তাদের ঘর সাজাতেই বেশি ভালোবাসে। জার্মানে ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে খুবই সুন্দর সুন্দর জিনিস ব্যবহার করা হয়। বাচ্চারা বড়দিনের গাছকে বিভিন্ন ছবি দিয়ে সাজিয়ে তোলে। এছাড়াও ৫ ডিসেম্বর বাচ্চারা তাদের জুতা ঘরের বাইরে রেখে আসে যাতে করে শান্তা তাতে কোনো উপহার দিয়ে যেতে পারে।

রাশিয়া : রাশিয়াতে বড় দিন পালিত হয় জানুয়ারির ৭ তারিখে এবং এখানে উপহার প্রদান করেন ‘বাবুস্কা’। বাবুস্কা বলতে বৃদ্ধ মহিলা বা দাদিকে বোঝানো হয় রাশিয়াতে। বাইবেলের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে এই নারী চরিত্র, যিনি শিশু যিশুকে উপহার দিতেন না। তাই অনুতাপ করে তিনি শিশুদের উপহার দিয়ে থাকেন।

পোল্যান্ড : পোল্যান্ডের বড়দিনের ট্রাডিশনাল খাবারের নাম ‘উইগিলিয়া’। এক পরিবার আরেক পরিবারকে উপহারস্বরূপ দেয় এই খাবারটি, আগামী বছরের অগ্রিম ভালো সংবাদ পাওয়ার জন্য।

ইতালি : ইতালিতে বড়দিন পালিত হয় সাত পদের মাছ এবং ডাল খেয়ে। এই খাবার মূলত খাওয়া হয় ভালো ভাগ্য এবং সম্পদ প্রাপ্তির জন্য। ইতালিতে বাচ্চারা বড়দিনের উপহার নেয় ‘লা বেনাফা’র কাছ থেকে।

আয়ারল্যান্ড : আয়ারল্যান্ডে বড়দিন পালিত হয় শান্তার জন্য মাংস দিয়ে তৈরি পাই এবং পিন্ট অব গিনেস রেখে দিয়ে, যাতে সে হালকা খাবার হিসেবে এগুলো খেতে পারে।

ফিনল্যান্ড : ফিনল্যান্ডে বড়দিনের গাছ সাজানো হয় জিওম্যাট্রিক মোবাইল দিয়ে। শান্তা ঘুরতে আসার আগে গরম পানি দিয়ে গোসল করার একটি নিয়ম আছে এখানে। এতে নাকি শরীর এবং মন শুদ্ধ হয়।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ডিসেম্বর ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়