ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বায়ান্নর ‘৬ ফেব্রুয়ারি’ যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বায়ান্নর ‘৬ ফেব্রুয়ারি’ যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

ভাষা আন্দোলনের মিছিল ও মোনাজাত (ছবি : সংগৃহীত)

শাহ মতিন টিপু : ভাষা আন্দোলনের কারণে ফেব্রুয়ারি মাস বাঙালির জীবনে বিশেষ মাস হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৫২ সালে এ মাসটিতে বাংলা ভাষার জন্য ত্যাগের যে উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছিল, তা নজিরবিহীন।

বায়ান্ন’র ৬ ফেব্রুয়ারি ছিল এই ভাষা আন্দোলনের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। কারণ, 'রাষ্ট্রভাষা দিবস' পালনের সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয় এইদিনেই।

এর দু’দিন আগে অর্থাৎ ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকাজুড়ে প্রতিবাদ মিছিলে আন্দোলনের যে গতি সঞ্চার করে তারই রেশ ধরে ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ছিল ছাত্রদের জন্য প্রচন্ড ব্যস্ততার দিন। আহুত একুশে ফেব্রুয়ারির হরতাল সফল করতে ব্যস্ততা বেড়ে যায় ছাত্র নেতাদের। আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে চলে ব্যাপক জনসংযোগ ও অর্থ সংগ্রহের কর্মকাণ্ড। এরই অংশ হিসেবে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে তার মোঘলটুলির বাসভবনে পূর্ববঙ্গ কর্মশিবির অফিসে ৬ ফেব্রুয়ারি সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় একুশে ফেব্রুয়ারি হরতালের পাশাপাশি 'রাষ্ট্রভাষা দিবস' পালনেরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একইসাথে ১১ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেন আন্দোলনকারীরা। তবে ১২ ফেব্রুয়ারি কোন কর্মসূচি না থাকলেও টানা তিনদিন ধরেই চলে এ কর্মসূচি। (জাতীয় রাজনীতি: ১৯৪৫ থেকে ৭৫; অলি আহাদ; ঢাকা।)

ভাষা সৈনিক গাজীউল হক তার স্মৃতিকথনে উল্লেখ করেন, 'ওই দু’দিনে অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থাও করা গেল। দু’দিন ঢাকার বুকে ও নারায়ণগঞ্জে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিপালিত হয়। অর্থ সংগ্রহই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। ওই দিন দু’টিতে যে অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল তা যৎসামান্য, ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতিলগ্নে এটা একটা চমৎকার পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। এ পতাকা দিবসকে উপলক্ষ্ করে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে আরো নতুন নতুন কর্মী। সে সময় ৫০০ পোস্টার লেখানোর দায়িত্ব দেয়া হলো নাদিরা বেগম এবং ডা. সাফিয়াকে। নাদিরা বেগম এবং ডা. সাফিয়া তাদের বান্ধবী ও অন্যান্য ছাত্রী নিয়ে পোস্টার লেখার ব্যবস্থা করেন।' (ভাষার লড়াইয়ের তুঙ্গ মুহূর্তগুলো; গাজীউল হক।)

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের এ কঠিন সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রতিদিনই ছাত্রদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়