ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

চা বিক্রেতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

এম আর লিটন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩০, ২ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চা বিক্রেতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী

এম আর লিটন : ‘আমার স্বপ্ন, সত্যিকারের মানুষ হওয়া। স্বপ্ন দেখি সেই দিনের যে দিন দেশে দুর্নীতি থাকবে না। এজন্য আমার ইচ্ছা প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে চাকরি করা। সেখান থেকে দেশ ও মানুষের জন্য কিছু করা। আমার বিশ্বাস আমাদের দেশকে একদিন খুব ভালো অবস্থানে দেখবো।’

দেশ ও নিজেকে নিয়ে এমন স্বপ্নের কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র মো. রবিউল ইসলাম (১৯)। জীবন যুদ্ধে লড়াকু সৈনিক রবিউল। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলাধীন গোলাপনগর গ্রামে বাড়ি। বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম পেশায় চা বিক্রেতা। পরিবারের তিন সন্তানের মধ্যে বড় রবিউল। বাবাকে সহযোগিতা করতে বাবার সঙ্গে চা বিক্রি করতেন। তাই বলে সংসারে শত কষ্ট হলেও পড়াশোনা তিনি বাদ দেননি। চা বিক্রি করেই ঘিওর ডিএন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ঘিওর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। উভয় পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান তিনি।

কিন্তু এরই মাঝে রবিউলের জীবনে নেমে আসে দুঃখের ছায়া। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পায়ে আঘাত পান। ক্যাম্পাসেই ঘটে এই ঘটনা। এলাকাবাসী ও আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় চার মাস চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। পুনরায় পড়াশোনায় মন দেন। এক সময়ের চা বিক্রেতা রবিউল রাবিতে ভর্তি হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে রাইজিংবিডি’কে বলেন, ‘এক কথায় অসাধারণ! রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভালোলাগা, ভালোবাসার এক অন্যরকম জায়গা। স্বপ্ন ছিল একদিন খুব ভালো একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। আল্লাহ আমার মনের আশা পূর্ণ করেছেন। এখানে শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেয়ে জীবনের আসল সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছি।’

মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার এটাকে যদি সাফল্য বলি, তাহলে তার পুরোটাই মা-বাবার ভালোবাসা, পরিশ্রম, ত্যাগের ফল। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সারাজীবন তাদের ভালোবেসে যাবো। আর তাদের সকল স্বপ্ন পূরণ করবো ইনশাল্লাহ।’

রবিউল খেলাধুলা করতে ও বই পড়তে ভালোবাসেন। এছাড়াও দেশিয় সংস্কৃতির প্রতি তার রয়েছে গভীর ভালোবাসা। তিনি মনে করেন, দেশের নিজস্ব সংস্কৃতি ধারণ করে চললে, বাংলাদেশ আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তাছাড়া দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে, প্রতিটি মানুষকে যার যার জায়গা থেকে সততার সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। তাহলেই কেবল সমাজ তথা দেশের উন্নয়ন সম্ভব।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ মার্চ ২০১৮/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়