যাদের আইকিউ আইনস্টাইনের চেয়ে বেশি!

মোহাম্মদ আসিফ : বুদ্ধিমত্তার বিচারে একজন সাধারণ মানুষের আইকিউ বা বুদ্ধিদীপ্ততার পয়েন্ট ১০০। যাদের আইকিউ পয়েন্ট ১৪০ তারা এককথায় প্রতিভাবান। বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন যদিও কখনো বুদ্ধিমত্তার কোনো পরীক্ষায় অংশ নেননি, তবুও ধারণা করা হয় তার আইকিউ পয়েন্ট ১৬০। কিন্তু এই ১৬০ পয়েন্ট কতিপয় মহামানবদের কাছে কিছুই না! চলুন জেনে নেওয়া যাক অধিক আইকিউ পয়েন্টসম্পন্ন কয়েকজন মানুষের পরিচিত।

১. জ্যাকব বার্নেট : আইকিউ ১৭০
বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের সমস্যা (অটিজম) নিয়ে মাত্র দুই বছর বয়সেই জ্যাকবকে চিকিৎসকের ছুরির নিচে যেতে হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসক বলেও দিয়েছিলেন, জ্যাকব হয়তো কখনো নিজের জুতোর ফিতেটাও বাঁধতে পারবে না! কিন্তু সেটা যে ভুল মতামত ছিল তার প্রমাণ জ্যাকব নিজেই।



জ্যাকব নিজের পোশাক আশাক পরিধান ও সাজসজ্জার বিষয়টিকে আয়ত্তে নিয়ে আসে। নিজের বুদ্ধিমত্তার জোরে জ্যাকব এক বছরের ব্যবধানে ক্লাস সিক্স থেকে কলেজ পর্যায়ে চলে যায়। এবং মাত্র ১০ বছর বয়সে সে কলেজে ভর্তি হয়। ১৩ বছর বয়সের মধ্যেই সে একজন প্রতিষ্ঠিত ফিজিশিয়ানে পরিণত হন। আর এখন ১৯ বছর বয়সে জ্যাকব তার পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে কাজ করছেন!

২. জুডিট পলগার : আইকিউ ১৭০
এই হাঙ্গেরিয়ান দাবার মাস্টারকে দাবা খেলার ইতিহাসে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মহিলা দাবাড়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়।



১৯৯১ সালে মাত্র ১৫ বছর ৪ মাসের মাথায় দাবা খেলার ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ড মাস্টার খেতাব অর্জন করেন। একটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তার আইকিউ লেভেল ১৭০।

৩. রিকরজনার : আইকিউ ১৯২ থেকে ১৯৮
নিজের বুদ্ধিমত্তার মাত্রা নির্ধারণে রিকরজনার ৩০টির মতো পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। পরীক্ষাগুলোর ফলাফল নির্ধারণের ধরনের ভিত্তিতে তার আইকিউ পয়েন্ট ১৯২ থেকে ১৯৮ এর মধ্যে। বিশ্বের দ্বিতীয় বুদ্ধিমান ব্যক্তি এই ব্যক্তি টিভির লেখক হওয়ার আগে একজন বাউন্সার, স্ট্রিপার ও নগ্ন মডেল হিসেবে কাজ করেছেন।



তিনি ‘হু ওয়ান্টস টু বি এ মিলিয়নিয়ার’ প্রোগ্রামে ১৬ হাজার মার্কিন ডলারের একটি ভুল প্রশ্ন করায় এবিসি নেটওয়ার্কের নামে মামলা দায়ের করেছিলেন এবং এ কারণেও তিনি বেশ আলোচিত। কিন্তু সেই মামলায় তিনি হেরে যান।

৪. ইভানগেলস কাটসিউলিস: আইকিউ ১৯৮
ওয়ার্ল্ড জিনিয়াস ডিরেক্টরির তথ্যমতে, ইভানগেলস কাটসিউলিস (এমডি, এমএসসি, এমএ, পিএইচডি) এর আইকিউ পয়েন্ট ১৯৮ এবং সবচেয়ে বেশি পরীক্ষিত।



দর্শনশাস্ত্র এবং ওষুধ গবেষণা প্রযুক্তির ওপর এই গ্রিক মনোবিজ্ঞানীর ডিগ্রিও রয়েছে।

৫. শো ইয়ানো: আইকিউ ২০০
আমেরিকান শল্য চিকিৎসক শো ইয়ানো নয় বছর বয়সেই কলেজে যাওয়া শুরু করেন এবং ২১ বছরের মাথায় এমডি ও পিএইচডি অর্জন করেন।



তায়কোয়ান্দোতে শো ইয়ানোর ব্ল্যাক বেল্ট রয়েছে। চার বছর বয়স থেকেই শো ইয়ানো গান রচনা করতে শুরু করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি শিশুদের স্নায়ুবিদ্যার ওপর গবেষণা শুরু করেন।

৬. নাথান লিওপোল্ড : আইকিউ ২০০
১৮ বছর বয়সেই নাথান ৯টি ভিন্ন ভাষায় কথা বলার সামর্থ্য অর্জন করেছিলেন। কিন্তু তিনি তার বুদ্ধিমত্তাকে ভালো কাজে ব্যবহার করেননি।



১৯২৪ সালে ৯ বছর বয়সে খুনের দায়ে নাথানলিওপল্ড ও তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার আগে লিওপোল্ড জেলে ৩৩ বছর কাটিয়েছেন।

৭. মেরলিন ভস সাভান্ট : আইকিউ ২২৮
মেরলিন ভস সাভান্ট এর বয়স যখন ১০ তখন একটি অ্যাডাল্ট লেভেল স্ট্যানফোর্ড-বাইনেট পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় যে, মেরলিন ভস সাভান্ট এর আইকিউ পয়েন্ট ২২৮।



যা পরবর্তীতে তাকে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে দেয়।

মেধা বিচারের পয়েন্টকে অশুদ্ধ মনে হওয়ায় ১৯৯০ সালে এই ক্যাটাগরি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৮৬ সাল থেকে মেরলিন ভস তার ‘আস্ক মেরিলিন’ ম্যাগাজিনের মাধ্যমে দার্শনিক ও গাণিতিক উত্তর দিয়ে আসছেন।

৮. আইনান চাওলে : আইকিউ ২৬৩
এই আইরিশ শিশুটির আইকিউ পয়েন্ট ২৬৩ বলে ধারণা করা হয়। ৮ বছর বয়সের মধ্যেই সে সিঙ্গাপুরের পলিটেকনিক থেকে তৃতীয় বর্ষের রসায়ন কোর্সের উপর ডিগ্রি গ্রহণ করে। ৯ বছর বয়সের মাথায় আইনান পাই এর প্রথম ৫১৮টি ডেসিম্যালের অবস্থান নির্ভুল ভাবে বলতে সক্ষম হয়।



১২ বছর বয়সে আইনান একটি শর্ট ফিল্মের জন্য সংগীত রচনা করেছিল। বর্তমানে ১৮ বছর বয়সে বিনোদনের দিকে তার দক্ষতা তৈরি হয়েছে, শর্ট ফিল্মের জন্য স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ করছে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মার্চ ২০১৮/ফিরোজ